কঙ্কালেশ্বরী কালীতলার মাঠে ‘কার্নিভাল’। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
জিটি রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল করার ইচ্ছা ছিল বর্ধমান পুরসভার। জেলা প্রশাসন ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তার সিদ্ধান্তও পাকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রাজ্যের তরফে কোনও সাড়া না পেয়ে জেলা প্রশাসন কার্নিভাল করা থেকে পিছিয়ে আসে। পূরণ হয়নি পুরসভার ইচ্ছে। তবে, গত বছরের মতো এ বারও কাঞ্চননগরে ‘দুর্গা কার্নিভালের’ আয়োজন করলেন পুরসভার কর্তা খোকন দাস।
কলকাতার রেড রোডের কার্নিভালের ধাঁচে গত বার থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে বর্ধমানের কাঞ্চননগর ও রথতলা এলাকায়। গত বার ১৭টি পুজো এই তাতে যোগ দিয়েছিল। এ বার যোগ দেয় ১৬টি পুজো। এ দিন বিকেলে ‘কার্নিভাল’ শুরুর আগে এলাকার কাউন্সিলর খোকনবাবু বলেন, ‘‘সবার মিলিত ইচ্ছায় আমরা এই কার্নিভাল করতে পেরেছি। এর মাধ্যমে মণ্ডপে না যেতে পারা মানুষজনও উদ্যোক্তাদের শিল্পকর্ম দেখতে পাবেন। সবচেয়ে বড় কথা, মানুষে-মানুষে মিলন ঘটবে।’’
কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী কালীতলা থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় ঢাক, ব্যান্ড, তাসা, আদিবাসী নৃত্য, রণপা নৃত্য ছিল। সেই সঙ্গে তুলে ধরা হয় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও সামাজিক সচেতনতার বার্তা। খর্গেশ্বরপল্লি, উদয়পল্লি, রথতলা হয়ে বাঁকা নদীর তীরে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। চার কিলোমিটার পথ ঘোরার পরে বাঁকা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেন পুজো উদ্যোক্তারা। শোভাযাত্রা দেখতে কাঞ্চননগরে হাজির ছিলেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব, বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় থেকে জেলা পরিষদের কর্তারা।
শোভাযাত্রা শুরুর আগে কঙ্কালেশ্বরী কালীতলার মাঠে প্রদর্শনী হয়। সেখানে খর্গেশ্বরপল্লি ‘মা তুমি কার?’ থিম তুলে ধরে। এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের কী রকম পরিস্থিতির মধ্যে থাকতে হয়, মানুষজন সচেতন না হওয়ায় কী ধরনের সমস্যা তৈরি হয়, তা তুলে ধরা হয়। বিচারকদের বিচারে ‘কার্নিভালে’ প্রথম হয় তারাই। দ্বিতীয় হয়েছে রথতলা পদ্মপুকুর পদ্ম সঙ্ঘ। বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে বার্তা দিয়ে তৃতীয় হয়েছে উদয়পল্লি সুভাষ সঙ্ঘ।
প্রদর্শনী দেখতে মাঠে তো বটেই, চার কিলোমিটার পথ জুড়ে শোভাযাত্রা দেখার জন্যও ভিড় জমান শহরবাসী।