প্রতীকী ছবি
রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার মালিকানা আর সম্পূর্ণ ভাবে সরকারের হাতে থাকবে না। বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের এই ঘোষণার পরে দুর্গাপুরের লগ্নিকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।
বিমা সংস্থায় লগ্নিকারী দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনের কৃষ্ণপদ রায়, শ্যামল বসাকেরা বলেন, ‘‘বোনাস ও সামগ্রিক অর্থ ফেরতের নিশ্চয়তা রয়েছে বলে আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করেও আমরা ওই সংস্থায় লগ্নি করেছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত সংশয়ে পড়ে যাচ্ছি। সংস্থার মালিকানার অংশবিশেষ বেসরকারি হাতে চলে গেলে ভরসা হারাবেন গ্রাহকেরা।’’ রায়ডাঙা এলাকার লগ্নিকারী চন্দ্রশেখর মণ্ডল, বিপদতারণ রায়েরা দাবি করেন, ‘এলআইসি আইনে’র একটি ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার লগ্নিকারীকে বোনাস-সহ অর্থ ফেরতের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। নতুন পরিস্থিতিতে সেই আইন বদলে ফেলা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে তাঁরা। আবার কলেজ পড়ুয়া রামমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্নেহাংশু রায়েরা জানান, বর্তমান সময়ে এসআইপি-তে লগ্নি করার প্রবণতা রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিমা সংস্থাটিতে লগ্নি করতে আদৌ আগ্রহ থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে তাঁরা।
তবে এর উল্টো মতও রয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ওই সংস্থাতেই লগ্নিকারী সিটি সেন্টারের প্রণয় দাঁ, মহম্মদ ইব্রাহিমেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘স্টক মার্কেটে সংস্থাটি নথিভূক্ত হবে। ফলে, পরিচালনা, লগ্নি বা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা আসবে। লগ্নিকারীরা বাজার দেখে এগোতে পারবেন।’’ পাশাপাশি, তাঁদের আশা, সংস্থার মুনাফা বৃদ্ধির ফলে লগ্নিকারীরাও উপকৃত হবেন। শেয়ার বাজারে লেনদেনকারী সংস্থার কর্মী বিনায়ক বসু জানাচ্ছেন, এই সিদ্ধান্তে সংস্থার পরিচালন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসবে। লগ্নিকারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সংস্থার একাধিক কর্মীর দাবি, এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু তাৎক্ষণিক ভাবে মনে হচ্ছে, সিদ্ধান্তটি ইতিবাচক নয়। ওই কর্মীরা জানান, তাঁদের বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি চূড়ান্ত করে ফেলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মী জানান, বিমা সংস্থাটি বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘আইআরডিএআই’-এর আওতাধীন। কিম্তু এই সংস্থাটি পরিচালিত হয় ১৯৫৬ সালের ‘এলআইসি আইনে’র দ্বারা। তাই আইআরডিএআই-এর ‘খবরদারি’ মানতে হয় না সংস্থাটিকে। কিন্তু সংস্থার অংশীদারিত্বের একাংশ বিক্রির যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা করতে গেলে ‘এলআইসি আইনে’ও পরিবর্তন আনতে হবে বলে সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।