এখানেই হবে পুজো। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কাঁকসার কুলডিহা গ্রামে দুর্গাপুজো হয়। অশক্ত শরীরে তাই বেশ কয়েক বছর ধরেই কেশবপুরের (ভালুককোঁদা) সত্তরোর্ধ্ব পুষ্প ঘোষের আর দেবীর দর্শন করা হয় না। পুজোর দিনগুলোতে তাই মন খারাপেই কাটত তাঁর। তবে এ বার গ্রামেরই কিছু মানুষের উদ্যোগে জোরকদমে চলছে প্রথম বার দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। মুখে তাই হাসি ফুটেছে পুষ্পদেবীর।
কাঁকসার বেশ কিছু গ্রামেই দুর্গাপুজো হয়। কেশবপুরে অন্য পুজোর চল থাকলেও এই পুজো হতো না। বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৩০টি পরিবারের বাস এই গ্রামে। তাঁদের অধিকাংশের পেশাই কৃষিকাজ। তাই এই পুজোর খরচের কথা ভেবেই এগোনো যাচ্ছিল না। কিন্তু গ্রামের বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, মহিলারা অন্য গ্রামে গিয়ে পুজো দেখতে যেতে পারতেন না। চারিদিকে ঢাকঢোল, মাইকের শব্দ, আনন্দের পরিবেশে গ্রামের একাংশের মানুষ সামিল হতে পারতেন না। আবার অনেকে চলে যেতেন আত্মীয়দের বাড়ি।
গ্রামের মানুষদের নিয়ে পুজোয় মেতে উঠতে গত বার পুজোর পরেই উদ্যোগী হন স্থানীয় কিছু যুবক। গোপাল ঘোষ, সন্দীপন পাল, উৎপল মণ্ডলরা জানান, দুর্গাপুজোর আয়োজন করা যে সহজ কাজ নয়, তা তাঁরা জানতেন। প্রতিমা, পুজোর প্রয়োজনীয় সামগ্রী, অন্যান্য খরচের জন্য কম করে প্রায় এক লক্ষ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু ছোট করে হলেও শুরুটা তাঁরা করতে চেয়েছিলেন। গ্রামেরই বাসিন্দা আশিস ঘোষ, ফাল্গুনী ঘোষরা জানান, গ্রামেরই মানুষই মুসকিল আসান করেছেন। প্রত্যেকেই নিজের সামর্থ মতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন সামগ্রী দিয়েও সাহায্য করছেন সবাই। এ বার গ্রামেই পুজো দেখতে পারবেন বলে খুশি গ্রামের মহিলারা। হীরারানি ঘোষ, মালতি মণ্ডল, পুতুল ঘোষরা জানান, অন্য গ্রামে আর পুজো দেখতে যেতে হবে না, এটাই বড় ব্যাপার। এ বার পুজোর চার দিনই বাড়িতে থাকবেন। প্রথম বার গ্রামের পুজো দেখতে আমন্ত্রণ জানাবেন আত্মীয়দেরও।