দাবি ইসিএলের সিএমডি-র

লক্ষ্যে পৌঁছতে বাধা জমি, দুর্যোগ

সিএমডি সুব্রতবাবু জানান, রাজমহল প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে সমস্যা দেখা দেওয়ায় এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রায় ২৬ শতাংশ কম কয়লা উত্তোলন হয়েছে। যার ফলে ইসিএলের সামগ্রিক উৎপাদনে ভাটা পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৬
Share:

এক দিকে জমি অধিগ্রহণের সমস্যা। অন্য দিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে চলতি আর্থিক বছরে কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কঠিন হয়ে উঠেছে সংস্থার পক্ষে, জানালেন ইসিএলের সিএমডি সুব্রত চক্রবর্তী।

Advertisement

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সংস্থার শ্রমিক-কর্মীদের উদ্দেশে রাখা বক্তব্যে সিএমডি জানান, কর্মদক্ষতা ও খনিগুলিতে আধুনিক কারিগরি ব্যবস্থা অবলম্বন করে সমস্যা মেটানো সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে সেগুলি কার্যকর হওয়ার কথা।

চলতি অর্থবর্ষে কয়লা মন্ত্রকের তরফে ইসিএলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে প্রায় ৫২ মিলিয়ন টন। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় ১২ মিলিয়ন টন বেশি।এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ঝাড়খণ্ডের রাজমহল খোলামুখ খনির উপরে অনেকটা ভরসা রেখেছিলেন ইসিএলের আধিকারিকেরা। কিন্তু হঠাৎই সেখানে জমি অধিগ্রহণ সমস্যা দেখা দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, জমির মালিকেরা জমি দিতে চাইছেন না। অনেকে আবার ইসিএলের জমির দখল ছাড়তে চাইছেন না।

Advertisement

সিএমডি সুব্রতবাবু জানান, রাজমহল প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে সমস্যা দেখা দেওয়ায় এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রায় ২৬ শতাংশ কম কয়লা উত্তোলন হয়েছে। যার ফলে ইসিএলের সামগ্রিক উৎপাদনে ভাটা পড়েছে। যদিও তাঁর দাবি, রাজমহলের তুলনায় অন্য এরিয়ার খনির উৎপাদন এ বার বেশ ভাল। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘রাজমহলের উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমরা লক্ষ্য থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছি। তবে ঝাড়খণ্ড সরকার ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চলছে। কিছুটা ইতিবাচক পদক্ষেপও করা হয়েছে। আশা করি দু’তিন মাসের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।’’

চলতি বছরে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও সংস্থার লক্ষ্যপূরণে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান ইসিএলের আধিকারিকেরা। তাঁরা জানান, জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে অবিরাম বৃষ্টিতে রানিগঞ্জ কয়লাঞ্চলের একাধিক খোলামুখ খনিতে জল ঢুকেছে। ফলে, কয়লা তোলা ও সরবরাহ মার খেয়েছে। সিএমডি জানান, এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ঝাঁঝরা প্রকল্পে ‘পাওয়ার্ড সাপোর্ট লং ওয়াল’ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রায় ২৫ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। অন্য খনিগুলিতেও এই রকম কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দলগত কর্মদক্ষতার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

১৯৭১ সালে খনি রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হওয়ার পর থেকে ২০১২ সালেই প্রথম লাভের মুখ দেখে ইসিএল। টানা তিন বছর লাভ করে ২০১৫ সালে সংস্থাটি বিআইএফআর থেকে মুক্ত হয়। সেই ধারা বজায় রাখতে হলে চলতি অর্থবর্ষেও সংস্থাকে লাভ করতে হবে, শ্রমিক-কর্মীদের এ কথা স্মরণ করিয়ে দেন সিএমডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন