প্রতীকী ছবি।
অভিযুক্ত বড় ছেলের খোঁজে বাড়ি গিয়ে বাবার বুকে ধাক্কা মারায় তাঁর মৃত্যু ঘটেছে। সোমবার জামুড়িয়ার শ্রীপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ ও এক জন এএসআইয়ের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করলেন মৃতের ছোট ছেলে।
মৃত আনন্দী যাদব (৬২) ইমলিধাওড়ার বাসিন্দা। মৃতের ছোট ছেলে রামনাথ যাদব এ দিন শ্রীপুর ফাঁড়িতেই অভিযোগ জানান। পুলিশ জানায়, ইমলিধাওড়ার বাসিন্দা ১২ জন যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাথর ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে। তাতে এক এএসআই-সহ কয়েক জন সিপিভিএফ কর্মী জখমও হন বলে পুলিশের দাবি। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আনন্দীবাবুর বড় ছেলে টারজানও।
রামনাথ জানান, শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ দাদার খোঁজে তাঁদের বাড়িতে আসেন শ্রীপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ লক্ষ্মীনারায়ণ দে ও ওই দিন জখম হওয়া এএসআই অশ্বিনী মণ্ডল। অভিযোগ, বাড়ির দরজায় ধাক্কা দিয়ে ঢোকেন লক্ষ্মীনারায়ণবাবু ও অশ্বিনীবাবু। সেই সময় আনন্দীবাবু বলেন, ‘টারজান বাড়ি নেই। ওই দিন গোলমালে ছেলে ছিলও না।’ অভিযোগ, এর পরেই অভিযুক্ত ওই দুই পুলিশকর্তা আনন্দীবাবুর বুকে সজোরে ধাক্কা মারেন। আনন্দীবাবু মাটিতে পড়ে যান। রামনাথের অভিযোগ, ‘‘বাবা বার্টের রোগী। তার পরে এমন ধাক্কায় আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে আসানসোলের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে তাঁকে দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।’’ সেখানেই সোমবার দুপুরে মৃত্যু হয় আনন্দীবাবুর। রামনাথবাবু বলেন, ‘‘সোমবার সন্ধ্যায় শ্রীপুর ফাঁড়িতে ওই দু’জন পুলিশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনন্দীবাবুর দেহ পাড়ায় আসতেই বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। সিপিএমের নেতৃত্বে ফাঁড়িতেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। সিপিএম নেতা মনোজ দত্তের ক্ষোভ, ‘‘পুলিশের অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে। অসহায় মানুষ পুলিশি অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লক্ষ্মীনারায়ণবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। এমন কিছু ঘটেনি।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনাকে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উত্তর মেলেনি এসএমএস-এরও। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিশনারেটের এক কর্তা দাবি করেন, ডাক্তারি রিপোর্টে ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ই লেখা হয়েছে।