গোলাপবাগে হাতি, রাতভর ধুন্ধুমার শহরে

কাটোয়া, কালনায় ঢুকেছিল আগেই। এ বার খোদ বর্ধমান শহরে ঢুকে পড়ল হাতি। তা-ও একেবারে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ খণ্ডঘোষ, বেলকাশ থেকে দামোদর পেরিয়ে হাতিটি বর্ধমানের গোদা এলাকায় ঢুকে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ০১:২২
Share:

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হাতি তাড়াচ্ছেন বনকর্মীরা। ছবি: উদিত সিংহ।

কাটোয়া, কালনায় ঢুকেছিল আগেই। এ বার খোদ বর্ধমান শহরে ঢুকে পড়ল হাতি। তা-ও একেবারে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে।

Advertisement

মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ খণ্ডঘোষ, বেলকাশ থেকে দামোদর পেরিয়ে হাতিটি বর্ধমানের গোদা এলাকায় ঢুকে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাড়া করতেই হাতিটি গোলাপবাগের দিকে এগোয়। পৌঁছন বন দফতরের কর্মীরা। তার মধ্যেই জল-পরিখা পেরিয়ে হাতিটি ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহারাদারদের দাবি, গেট ছাড়াও ওই পরিখা পেরিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকা যায়। হাতিটি সম্ভবত সে দিক দিয়েই ঢুকেছে। রাত বাড়লে কয়েকশো লোক জমে যায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। হুলা পার্টির লোকজনও আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হুলস্থুল পড়ে যায়। আতঙ্ক ছড়ায় লাগোয়া এলাকাতেও।

Advertisement

বন দফতরের কর্মীদের দাবি, ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে হাতিটিকে বশে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে বহু গাছ থাকায় হাতিটি তার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। ফলে হাতিটিকে নিশানা য় আনতে মুশকিল হচ্ছে বলেও কর্মীদের একাংশের দাবি। পুলিশও ইতিমধ্যেই বর্ধমান শহরে মোটরবাইকে সর্তকতা-প্রচার শুরু করেছে। শহরবাসীদের ওই দিকে না যেতে, রাতে বাইরে না বেরোনোর আর্জি জানানো হচ্ছে।

সকালে ইতিমধ্যেই এই হাতির হানায় আহত হয়েছেন খণ্ডঘোষের শশঙ্গা গ্রামে স্বপনকুমার ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। বর্ধমানে মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে তিনি খেতে যাচ্ছিলেন। আচমকা একটি হাতি তাঁকে আক্রমণ করে। পরে বর্ধমান মেডিক্যালে স্বপনবাবুকে দেখতে আসেন খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ। তিনি জানান, গ্রামে হাতি ঢোকার খবর বন দফতরকে জানানো হয়েছে। সেটিকে লোকালয় থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতিটি বাঁকুড়ার পাত্রসায়র থেকে বর্ধমানে ঢুকে পড়ে। সেখানেও আতঙ্ক ছড়ায়। তবে ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত দশটা নাগাদ দাঁতালটি গড়ধার, মুসলিমপাড়া, কামারপাড়া, দক্ষিণপাড়া হয়ে পাত্রসায়র বাজারে পৌঁছয়। সেখানে বেশিক্ষণ থাকেনি। বাইপাস পেরিয়ে পার্কের পাশ দিয়ে চলে যায় তাজচক, মুসরো গ্রামের দিকে। তারই মাঝে এক জনের মড়াই ভেঙে ধান নষ্ট করেছে হাতিটি। পাত্রসায়র ডান্না দিঘির পার্কের খুঁটি উপড়ে বেড়া ভেঙে ফেলে। পাত্রসায়র রেঞ্জ আধিকারিক পৃথ্বীশ ঘোষ বলেন, “হাতি বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি করেনি। ঘণ্টাখানেক এলাকায় ঘোরাঘুরি করে ফের জঙ্গলে চলে গিয়েছে। বনকর্মীরা সজাগ আছেন।” পঞ্চায়েত প্রধান সুব্রত কর্মকার বলেন, “হাতির দল যে ভাবে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে তা খুবই উদ্বেগের। গ্রামবাসীরা যাতে সতর্ক থাকেন সে জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন