পদ্মের জোগান দিতে মাথায় হাত

বর্ধমান ছাড়াও আউশগ্রাম, ভাতার, মেমারি, গুসকরা, বীরভূমের আমোদপুর, সাঁইথিয়া থেকে পদ্মচাষি, পদ্ম ব্যবসায়ীরা শহরে আসেন পুজোর সময়।

Advertisement

সৌমেন দত্ত 

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১৭
Share:

পদ্ম তুলছেন চাষি, কালনার মীরহাটায়। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

এক দিকে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা, আর এক দিকে ক্রমাগত চাহিদা— জোড়া চাপে মাথায় হাত পড়েছে পদ্মচাষিদের।

Advertisement

তাঁদের দাবি, শুরুর দিকে বৃষ্টির অভাব ছিল। পরে ধাপে ধাপে বৃষ্টি হওয়ায় চাষ করতে পেরেছিলেন তাঁরা। এখন ভোরের দিকে শিশির পড়ায় পদ্মফুল ফোটার আগেই পাপড়ি ঝরে যাচ্ছে। ফলে পুজোর মুখে বাজারে চাহিদার তুলনায় পদ্মের জোগান অনেকটাই কম থাকবে, আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

বর্ধমান ছাড়াও আউশগ্রাম, ভাতার, মেমারি, গুসকরা, বীরভূমের আমোদপুর, সাঁইথিয়া থেকে পদ্মচাষি, পদ্ম ব্যবসায়ীরা শহরে আসেন পুজোর সময়। ওই সব এলাকার সঙ্গে বাঁকুড়া, হুগলির একাংশ পুজো উদ্যোক্তারাও পদ্মের বরাত দেওয়ার জন্য বর্ধমান শহরে আসেন। দরদাম ঠিক হলে বায়না দিয়ে ফিরে যান তাঁরা। চতুর্থী বা পঞ্চমীতে এসে ফুল নিয়ে যান। এ বারেও অনেকে আসছেন, দরদামও হচ্ছে, কিন্তু পদ্ম দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে বেশ চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। ফুল ব্যবসায়ীদের দাবি, পুজো উদ্যোক্তাদের চাহিদা মেটাতে ওড়িশা, বেঙ্গালুরু, বিশাখাপত্তনম এমনকি, তাইল্যান্ড থেকেও ফুলের আমদানি করছেন তাঁরা।

Advertisement

গত বছর পদ্মের দাম চড়া ছিল। চাষিদের দাবি, আবহাওয়া ভাল থাকায় চাষ ভাল হয়েছিল। ফুলও ভাল হয়েছিল। তাঁদের আশা ছিল, এ বার গত বারের চেয়েও বেশি দামে পদ্ম বিকোবে বাজারে। কিন্তু সে আশা অনেকটাই ফিকে হয়েছে গত কয়েক দিনে। চাষিরা জানান, ফুল ফোটার মুখে শিশির পড়লে বা বৃষ্টি হলে পাপড়ি ঝরে যায়। গোলাপি পদ্ম কালচে রঙের দেখতে হয়। সেই ফুল বাজারে বিক্রি হয় না। উদ্যানপালন দফতরের বর্ধমানের অধিকর্তা কৃষ্ণেন্দু ঘড়াইও বলেন, ‘‘এমনিতেই দিনে দিনে পদ্মচাষ কমছে। তার উপর প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় ফুল ফোটার আগেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই সময় শিশির পড়লে পাপড়ি কমজোরি হয়ে পড়ে। বাতাসে ভেসে থাকা নানা জীবাণুর হামলায় ফুল ফোটার সুযোগ পায় না।’’

পদ্মচাষি চঞ্চল হাজরা, অমর দাসদের দাবি, প্রতি বছর আষাঢ়, শ্রাবণে জলাশয় ভরে যায় পদ্ম ফুল, পাতায়। আশ্বিন, কার্তিক মাসের গোড়া পর্যন্ত ফুল মেলে। এ বার জলের অভাবে প্রথম থেকেই পাতা কুঁচকে গিয়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে সাবমার্সিবলের সাহায্যে পুকুরে জল ভর্তি করতে হয়। গুসকরার এক পদ্মফুল সরবরাহকারী সুনীল মণ্ডলের দাবি, “এই সময় কলকাতার বাজারে প্রতিদিন ১৫ হাজার ঝুড়ি পদ্ম সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি ঝুড়িতে তেরশো মতো ফুল থাকে। কিন্তু বাজার ধরার মুখেই পদ্ম মিলছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন