দেওয়ালে হাত দিলেই ‘শক’ প্রাথমিক স্কুলে

স্কুলের পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা জানায়, টানা বৃষ্টিতে বেঞ্চ, চেয়ার থেকে স্কুলের ব্যাগ, বইখাতা ভিজছে সবই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চিত্তরঞ্জন শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share:

ক্লাসঘরে জল। তারই মাঝে পড়াশোনা। চিত্তরঞ্জনে। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়ে জল। নালা উপচে নোংরা জল ঢুকছে ক্লাসঘরে। এমনকি, স্যাঁতসেঁতে দেওয়ালে শর্ট সার্কিটও হচ্ছে বলে জানান অভিভাবকেরা। এর মধ্যেই চলছে পড়াশোনা। অভিযোগ, পরিকাঠামোর এমনই হাল চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের অন্তর্গত প্রাথমিক স্কুল পূর্ব সুন্দরপাহাড়ী নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়টির।

Advertisement

চিত্তরঞ্জন রেল শহরের হাসপাতাল কলোনি এলাকার ওই স্কুল-ভবনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা। অভিযোগ, ভবন সংস্কারে কোন পদক্ষেপই করা হচ্ছে না। স্কুলের পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা জানায়, টানা বৃষ্টিতে বেঞ্চ, চেয়ার থেকে স্কুলের ব্যাগ, বইখাতা ভিজছে সবই।

প্রথম শ্রেণির পড়ুয়া শিখা বাউরি, পঞ্চম শ্রেণির অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়েরা বলে, ‘‘বৃহস্পতিবার ক্লাসঘরের দেওয়ালে হাত দিতেই ‘চিনচিন’ করে উঠল। ম্যাডামকে জানিয়েছি সে কথা।’’ অভিভাবকদের দাবি, বিদ্যুতের ‘শকে’র কারণেই এমনটা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় অভিভাবকেরা। শেখর বাউরি নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকব কী করে। কখন কী হয়, এই ভেবেই দিন কাটে।’’

Advertisement

একই রকম আশঙ্কায় রয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা অপর্ণা নাথ। তাঁর কথায়, ‘‘যতক্ষণ স্কুল খোলা থাকছে, সব সময় চোখে চোখে রাখতে হয় পড়ুয়াদের। মনে হয়, এই বুঝি ছাদ ভাঙল।’’ এ ছাড়া দেওয়াল ও ছাদ থেকে মাঝেসাঝে খসে পড়ছে পলেস্তরা, চাঙড়। এলাকা সূত্রে জানা গেল, হাসপাতাল কলোনি লাগোয়া এলাকা এবং ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম থেকে পড়ুয়ারা এই স্কুলে আসে। দ্রুত ভবন সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৭-য় স্কুলটি তৈরি হয়। বর্তমানে স্কুলটি রাজ্য সরকারের অনুমোদিত। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনও দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু স্কুল ভবনটি রেল কর্তৃপক্ষ বানিয়ে দিয়েছে। তাই এটির দেখভালেরও দায়িত্ব তাদের। অপর্ণাদেবী জানান, ভবন সংস্কারের জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। একই দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল গোপের ক্ষোভ, ‘‘একাধিক বার ভবন সংস্কারের জন্য রেলকে বলা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।’’

যদিও সংস্থার চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ বলেন, ‘‘আমরা সম্প্রতি ওই স্কুলে বিদ্যুৎ-সংযোগ দিয়েছি। স্কুলের তরফে ভবন সংস্কারের আর্জি জানানো হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান আশিস দে’র আশ্বাস, সমস্যার কথা তাঁকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানালে তিনিও ব্যবস্থা নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন