ছৌ, যাত্রায় গাজন-মেলা শিল্পাঞ্চল জুড়ে

জনশ্রুতি অনুযায়ী দীর্ঘ দিন আগে কোথাও স্বপ্নাদেশে, কোথাও চাষ করতে গিয়ে লাঙলের ফলায় উঠে আসে মূর্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অন্ডাল শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:১০
Share:

উৎসব: চন্দ্রচূড় মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র

জনশ্রুতি অনুযায়ী দীর্ঘ দিন আগে কোথাও স্বপ্নাদেশে, কোথাও চাষ করতে গিয়ে লাঙলের ফলায় উঠে আসে মূর্তি। তার পরে থেকেই পশ্চিম বর্ধমানের নানা এলাকায় শুরু হয় পুজো, গাজন উৎসব। উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে। পরিবেশিত হয় ছৌ, যাত্রা, বাউল-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

Advertisement

অন্ডালের কাজোড়ার গ্রামে প্রবীণ বাসিন্দা অক্ষয় গোপ জানান, প্রায় এক শতাব্দী আগে পুজো শুরু হয়। জনশ্রুতি, কয়েকশো বছর আগে এক চাষি মাঠে হাল দিচ্ছিলেন। লাঙলের ফলায় উঠে আসে তিনটি শিবলিঙ্গ। তার পরে গ্রামের জমিদার পরিবার সেগুলি প্রতিষ্ঠা করে। তিনটি শিলা কালাগ্নি, মহারুদ্র ও নীলরুদ্র রূপে পূজিত হন। গাজন উৎসবে মেলাও আয়োজিত হয় বহু দিন ধরে। মেলা চলে পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত।

জামুড়িয়ার সাতগ্রামে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করে সিহারশোলের জমিদার বাড়ি। বর্তমানে পুজো ও উৎসব পরিচালনা করে পিনাকী সমিতি। গাজন উপলক্ষে বাউল, ছৌ, যাত্রার আসর বসেছে বলে জানান সমিতির সদস্য স্বপন রজক।

Advertisement

প্রায় চার শতাব্দী আগে আসানসোলের বুধাগ্রামে শিব পুজো শুরু হয়। গ্রামের বাসিন্দা সন্দল হাজরা জানান, ১৯৭৭ সাল থেকে গাজন উৎসব আয়োজিত হচ্ছে। রয়েছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় কাউন্সিলর রকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গাজন এলাকার সবথেকে বড় সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।” আসানসোল উত্তরে সুইডি, রঘুনাথবাটি, মরিচকোটা ও এথোড়ার মাঝামাঝি জায়গায় চন্দ্রচূড় শিবমন্দিরটিও শতাব্দী প্রাচীন। এই পুজো নিয়েও রয়েছে জনশ্রুতি। মন্দির সংস্কার সমিতির সম্পাদক অশোক রায় জানান, চন্দ্রকান্ত বাউরি নামে এক জন স্থানীয় চক্রবর্তী পরিবারের খেতমজুর ছিলেন। শোনা যায়, তিনি এক দিন মাঠে হাল দিচ্ছিলেন। লাঙলের ফলায় একটি পাথরে ধাক্কা লাগলে তা থেকে ‘রক্ত’ বের হতে দেখা যায় বলে বাসিন্দাদের দাবি। তার পরে চন্দ্রকান্ত বাড়ি ফিরে ঘুমনোর সময়ে ‘চন্দ্রচূড়’ নামে শিব-পুজো শুরু করার স্বপ্নাদেশ পান। এই ‘ঘটনা’র কয়েক বছর বাদে স্বপ্নাদেশ পেয়ে কাশিমবাজারের রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী মন্দির তৈরি করেন। এখানের উৎসবে যোগ দেন জেলার নানা প্রান্তের মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন