ধান বিক্রিতে লাগবে সচিত্র পরিচয়পত্রও

ফড়েদের রুখতে অভিযোগ থানায়

কয়েক দিন আগে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্ধমানে এসে ফড়েদের বাড়বাড়ন্তের জন্য চালকল মালিকদের দায়ী করেছিলেন। সেই চালকল মালিকরাই বুধবার গলসি থানায় ১৭ জন ফড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে মামলা রুজু করলেন। ফড়েদের উৎপাত ঠেকাতে ব্লক অফিসের দেওয়া টোকেনের সঙ্গে সচিত্র পরিচয়পত্র দেখিয়ে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করা বাধ্যতামূলক বলে সিদ্ধান্ত নিল বর্ধমান প্রশাসনও। বুধবার বিকালে জেলাশাসক, খাদ্য নিয়ামক ও চালকল মালিকদের বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৫ ০১:৫৮
Share:

কয়েক দিন আগে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্ধমানে এসে ফড়েদের বাড়বাড়ন্তের জন্য চালকল মালিকদের দায়ী করেছিলেন। সেই চালকল মালিকরাই বুধবার গলসি থানায় ১৭ জন ফড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে মামলা রুজু করলেন। ফড়েদের উৎপাত ঠেকাতে ব্লক অফিসের দেওয়া টোকেনের সঙ্গে সচিত্র পরিচয়পত্র দেখিয়ে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করা বাধ্যতামূলক বলে সিদ্ধান্ত নিল বর্ধমান প্রশাসনও। বুধবার বিকালে জেলাশাসক, খাদ্য নিয়ামক ও চালকল মালিকদের বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

জেলা চালকল মালিকদের দাবি, খাদ্যমন্ত্রী বর্ধমানে বৈঠক করে যাওয়ার দু’দিন পরেই, রবিবার গলসির একটি চালকলে হামলা চালায় ফড়েরা। চাষিদের আটকে দিয়ে চালকল যাওয়ার রাস্তা কেটে দেয় ফড়ের দল। চালকল মালিকদের অভিযোগ, চাষিরা সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে ফড়েদের অল্প দামে সেই ধান বিক্রি করতে বাধ্য হবেন। আর ফড়েরাও ব্লক অফিস থেকে চাষিদের দেওয়া কুপন দেখিয়ে চালকল মালিকদের কাছে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করবে। এই উৎপাত ঠেকাতেই এ দিন গলসি থানায় ওই চালকলের মালিক তপন চট্টোপাধ্যায় গলসির বিভিন্ন এলাকার ১৭জন ফড়ের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। বর্ধমান জেলা চালকল সমিতিও জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছেন, জেলার বিভিন্ন চালকলগুলির সামনে চাষির নাম করে ফড়েরা ঝামেলা পাকাচ্ছে। গলসির ঘটনাকে তুলে ধরে ফড়েদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও আবেদন করেন তাঁরা। জেলা চালকল সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, “আমরা পুরো বিষয়টি মন্ত্রীকে জানিয়েছি।” জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “ফড়েদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে নির্দেশ দিয়েছি।” আজ, বৃহস্পতিবার গলসি ১ ব্লকে ফড়েদের উৎপাত ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত), খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমার পাঠক ও চালকল মালিকরা বৈঠক করবেন।

এ দিনই জেলাশাসকের দফতরে অন্য একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শুধুমাত্র ব্লক অফিসের দেওয়া কুপন দেখিয়ে আর সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারবেন না চাষিরা। কিষাণ মান্ডি, চালকল কিংবা বিভিন্ন শিবিরে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির সময় চাষির সচিত্র পরিচয়পত্র দেখানো বাধ্যতামূলক বলেও বিকেলের ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা খাদ্য নিয়ামক 5

Advertisement

সাধনকুমার পাঠক বলেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে চাষিরা ব্লক অফিস থেকে পাওয়া কুপন অন্য কাউকে দিতে পারবেন না। তাতে কিছুটা হলেও ফড়েদের উৎপাত কমবে।”

এ দিনের বৈঠকে চালকল মালিকরা ফের দাবি করেন, কিষাণ মান্ডিতে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে চাষিদের উৎসাহ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়াও চালকল মালিকরা সহায়ক মূল্যে যে ধান কিনবে তা যেন সরকার ‘লেভি’ হিসাবে নেয় বলেো তাঁদের দাবি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “লেভির লক্ষ্যমাত্রা এখনও পূরণ হয়নি। সে জন্য সরকারকে লেভি নিতেই হবে। চালকল মালিকদের প্রান্তিক চাষিদের সমস্ত ধান সহায়ক মূল্যে কেনার প্রতিশ্রুতি এ দিনের বৈঠকে দিতে হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement