জেলা পরিষদের প্রথম মহিলা সভাধিপতি

জেলা ভাগের পরে সহ সভাধিপতি পদে বসেছিলেন খণ্ডঘোষের শম্পা ধারা। এ বার তাঁর হাতেই জেলা পরিষদের ভার তুলে দিল শাসকদল। আর গতবারের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু হচ্ছেন সহ সভাধিপতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৭
Share:

মন্ত্রীর সঙ্গে শম্পাদেবী। নিজস্ব চিত্র

জেলা ভাগের পরে সহ সভাধিপতি পদে বসেছিলেন খণ্ডঘোষের শম্পা ধারা। এ বার তাঁর হাতেই জেলা পরিষদের ভার তুলে দিল শাসকদল। আর গতবারের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু হচ্ছেন সহ সভাধিপতি। সোমবার রাতে জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পর ওই নামগুলি ঘোষণা করেন জেলার পর্যবেক্ষক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের উপর ভরসা রেখেছিলেন।আশীর্বাদ করেছিলেন। তাই ৫৮-৫৮ হয়েছে। সর্বসম্মত ভাবে শম্পা ধারাকে সভাধিপতি ও দেবু টুডুকে সহ-সভাধিপতি করা হয়েছে।’’ এক মাসের মধ্যে কর্মাধ্যক্ষদের নাম ঘোষণা করা হবে বলেও তাঁর আশ্বাস।

দলের এক নেতার কথায়, “জেলা পরিষদের গোষ্ঠী রাজনীতিতে শম্পাদেবীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে দেবুবাবুর। আর জেলা পরিষদ পরিচালনার ভার দেবুবাবুর হাতেই রাখতে চেয়েছিল দল। এই ঘোষণায় তা আরও স্পষ্ট হল।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘জেলার অধিকাংশ বিধায়ক এক দিকে থাকলেও দেবুবাবু যাতে অস্বস্তির মধ্যে না পড়েন তাই তাঁর পছন্দের প্রার্থীকেই সভাধিপতি হিসেবে বেছে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’

Advertisement

দলীয় সূত্রে জানা যায়, দেবুবাবুর হাতেই জেলা পরিষদের ভার রাখার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্তারা। তাঁদের মধ্যেই এক জন বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে সুষ্ঠু ভাবেই জেলা পরিষদ পরিচালনা করেছেন দেবুবাবু। তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনও সদস্য ক্ষোভ দেখাননি। নতুন কারও হাতে দায়িত্ব গেলে প্রশাসন চালাতে সমস্যা হত বলে বিভিন্ন ভাবে উচ্চ কর্তাদের জানানো হয়েছিল।’’

শম্পাদেবীর জন্ম রায়নার শিবরামপুর গ্রামে। ৬ বছর বয়সে তিনি চলে আসেন খণ্ডঘোষের লোদনা পঞ্চায়েতের শ্যামডাঙা গ্রামে। সেখানে প্রাথমিক স্কুলের পাঠ শেষ করে বারিশালী হাইস্কুলে ভর্তি হন। ২০০৯ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০১১ সালে খণ্ডঘোষ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজে কলা বিভাগে ভর্তি হন। তখন থেকেই রাজনীতিতে সরাসরি প্রবেশ। স্নাতক পড়ার সময়েই ২০১৩ সালে খণ্ডঘোষের ৪ নম্বর আসন থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হয়ে জিতে যান। শম্পাদেবী বলেন, “আমাদের পরিবার প্রথম থেকেই তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াকু মনোভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে বাবা গঙ্গাধর ধারা সিপিএমের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। দাদাও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।’’ ২০১৩ সালেই খণ্ডঘোষের তৎকালীন ব্লক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের হাত ধরে জেলা পরিষদে প্রার্থী হয়ে যান শম্পা। চুপচাপ থাকা ওই তরুণী সভাধিপতির নজরে পড়ে যান। জেলা ভাগের পরে তফসিলি জাতির মহিলা সহ সভাধিপতির খোঁজ চলাকালীন দেবুবাবুই শম্পার নাম প্রস্তাব করেন। এ দিন রাতে নাম ঘোষণার পর দেবুবাবু বলেন, “আমার কাছে সব সদস্যই পরিজন। দল যার নাম ঠিক করেছে, তাঁর নেতৃত্বেই আমরা চলব।’’

জেলা পরিষদের ইতিহাসে প্রথম মহিলা সভাধিপতি হচ্ছেন শম্পা। কেমন লাগছে? শম্পাদেবী বলেন, “দল আমাকে গুরুদায়িত্ব দিয়েছে। সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন