ভোটের পরে হামলা-সংঘর্ষে জড়িত অভিযোগে তৃণমূলের পাঁচ কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা মঙ্গলবার রাতে ও বুধবারে তাদের ধরে। মঙ্গলবার দিনভর গণ্ডগোলের পরে এ দিন অবশ্য আর নতুন করে কোনও অশান্তি পাকেনি। এলাকায় টহল দিচ্ছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ভোটপর্ব মেটার পর থেকেই পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা এলাকায় হামলা, মারধর, ভাঙচুর শুরু হয়। রাতে লস্করবাঁধে সিপিএম কর্মী দুর্যোধন বাগদির উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় তাঁকে। এর পরে ভাঙচুর হয় আর এক সিপিএম কর্মী অমর রুইদাস এবং বনগ্রামে শ্রীধর রুইদাসের বাড়িতে। মাধাইপুরে অবশ্য হামলাকারীরা সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে পালায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে নতুন করে গোলমালের শুরু। নতুনডাঙায় সিপিএম সমর্থক শান্তি রুইদাসের বাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ। বাড়ির আসবাব ভাঙচুর করা হয়। মাধাইপুরে মারধর করা হয় সিপিএম সমর্থক শিশির বাগদিকে। জখম অবস্থায় রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ পড়েছিলেন তিনি। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। সিপিএম সমর্থক মধু রুইদাসের মোটরবাইক মাটিতে ফেলে ভাঙচুর করা হয়। পাশিউলির অভিলাল বাউড়ির বাড়িতে ভাঙচুর হয়। ওই গ্রামেরই তৃণমূল সমর্থক ভোলারাম বাউড়ির বাড়িতেও ভাঙচুর চলে। সপরিবারে পালিয়ে যান ভোলারামবাবু।
মঙ্গলবার থেকেই পুলিশের বড় বাহিনী এলাকায় টহল শুরু করেছিল। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, পানশিউলি থেকে কাজল ঘোষ ও অজয় বাউড়ি, নতুনডাঙা থেকে প্রণব সেন, লস্করবাঁধ থেকে বিকাশ ঘোষ ও চন্দেরডাঙা থেকে পার্থসারথি ঘোষকে ধরা হয়েছে। আরও কয়েক জনকে খোঁজা হচ্ছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বুধবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় জানান, ধৃতেরা তৃণমূল কর্মী। তবে তাঁর অভিযোগ, সিপিএম মিথ্যে অভিযোগ এনে ধৃতদের ফাঁসিয়েছে। সুজিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের সমর্থক ভোলারাম বাউড়ির বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে। তিনি পরিবার নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। অথচ, মিথ্যে অভিযোগ এনে সিপিএম আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ফাঁসাচ্ছে।’’
সিপিএম নেতারা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দলের জেলা কমিটির সদস্য শিশির ঘোষ বলেন, ‘‘একের পর এক সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা হয়েছে। এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে তৃণমূল। ভোটে ছাপ্পা ভোট দিতে না পেরে রাগে ফুঁসছে ওরা। তবে মানুষই ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন।’’