বাঁ দিকে, ‘পর্যটন উৎসবে’র প্রচার। ডান দিকে, ‘খাদ্য ও পিঠেপুলি উৎসবে’র বার্তা। কালনায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
এক জন পুরপ্রধান, অন্য জন একই দলের বিধায়ক। দু’জনেই পৃথক দু’টি উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা। দলের অন্দরে দু’জনের জোর টক্কর দেখা যায় বলে কালনার তৃণমূল কর্মীদের দাবি। সেই টক্করের ছোঁয়া এ বার দু’টি উৎসবেও। আর এই টক্করে আখেরে লাভ তাঁদেরই বলে দাবি কালনার বাসিন্দাদের।
কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ ও বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু দলের অন্দরে বিবাদমান গোষ্ঠী বলেই পরিচিত। মিছিল হোক বা বিজয়া সম্মিলনী— দু’জনকে এক মঞ্চে দেখা যায় না বলে দাবি তৃণমূল কর্মীদের একাংশের। এই টক্করের ছোঁয়া এ বার ‘পর্যটন উৎসব’ এবং ‘খাদ্য ও পিঠেপুলি উৎসব’কে কেন্দ্র করেও। পর্যটন উৎসবের মূল দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু। আর পিঠেপুলি উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা পুরপ্রধান। শহরবাসীর একাংশের দাবি, কোন উৎসবে দর্শকের সংখ্যা বেশি, কোথায় নামী শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের জৌলুস বেশি হবে— তা নিয়েই প্রতি বছর চলে জোর টক্কর।
নতুন বছরে ৪-৯ জানুয়ারি হবে পর্যটন উৎসব। থাকছেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রূপম ইসলাম, অনিকের মতো সঙ্গীতশিল্পীরা। উদ্যোক্তাদের দাবি, আসবেন মুম্বইয়ের আকৃতি কাকর। পর্যটন উৎসব শেষ হতে না হতেই ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে এক সপ্তাহব্যপী পিঠেপুলি উৎসব। উদ্যোক্তাদের দাবি, এ বার তাঁরা আনছেন মুম্বইয়ের মহম্মদ আজিজ এবং নচিকেতা, শিলাজিৎ, শুভমিতা, খরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চন মল্লিকের মতো রাজ্যের তারকাদের। এর পরেও আস্তিনে লুকনো তাস রয়েছে বলে দাবি দু’পক্ষেরই।
ইতিমধ্যেই দু’পক্ষের লড়াই জমে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। বড় হোর্ডিং, ফ্লেক্স, তোরণ লাগিয়ে টক্করের রেশ দেখা যাচ্ছে কালনা শহরের রাস্তা, মোড়েও। তবে এমন টক্করে খুশির হাওয়া শহরবাসীর মধ্যে। এক জন বাসিন্দা যেমন বলেন, ‘‘এমন লড়াই হলে এলাকার সংস্কৃতিই তো লাভবান হবে।’’
তবে যুযুধান দু’পক্ষের মাথারা অবশ্য প্রকাশ্যে এমন টক্করের কথা স্বীকার করেননি। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব ভাল অনুষ্ঠান করার চেষ্টা করছি। কারও সঙ্গে আমরা নিজেদের মেলাই না।’’ পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগেরও বক্তব্য, ‘‘পিঠেপুলি তো হারিয়ে যেতে বসেছে। বাঙালির পাতে তা ফিরিয়ে আনতেই অনুষ্ঠান। আমরা কোনও প্রতিযোগিতায় নেই।’’