লকগেটের সামনে বসল ‘ফ্লোটিং গেট’

এ দিন প্রথমে নারকেল ফাটিয়ে গেটটিকে ‘পুজো’ করা হয়। তার পরে পাম্প চালিয়ে ভাসমান গেটটির ভিতর থেকে জল বের করা হয়। ব্যারাজ সূত্রে জায়, এই ধরনের গেট ভাসমান। কিন্তু কোথাও আটকে রাখতে গেলে সেটিকে জল ভরে ভারী করতে হয়।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১৫
Share:

স্বস্তি: এক নম্বর লকগেটের সামনে বসছে ভাসমান গেটটি। নিজস্ব চিত্র

ঠিক যেন জেটি ভাসছে, দুর্গাপুর ব্যারাজে বেঁকে যাওয়া এক নম্বর লকগেটের সামনে লাগানোর জন্য ভাসিয়ে আনা ‘ফ্লোটিং গেট’ দেখে এমনটাই প্রতিক্রিয়া এক শহরবাসীর। লকগেট মেরামত পর্ব ঠিক ভাবেই শেষ করা গেল দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন সেচ দফতরের কর্তারাও।

Advertisement

সোমবার সকাল আটটা। দুর্গাপুরের ডিভিসি ব্যারাজের ১৩ নম্বর গেটের সামনে রাখা ‘ফ্লোটিং গেট’টি ভাসানোর কাজ শুরু হল। ব্যারাজ সূত্রে জানা যায়, বছর খানেক আগে ১৩ নম্বর গেটটি বিকল হয়ে গিয়েছিল। সেই সময়ে সেখানে ফ্লোটিং গেটটি আটকে মেরামত করা হয়। তারপরে সেখান থেকে ফ্লোটিং গেটটি আর সরানো হয়নি।

এ দিন প্রথমে নারকেল ফাটিয়ে গেটটিকে ‘পুজো’ করা হয়। তার পরে পাম্প চালিয়ে ভাসমান গেটটির ভিতর থেকে জল বের করা হয়। ব্যারাজ সূত্রে জায়, এই ধরনের গেট ভাসমান। কিন্তু কোথাও আটকে রাখতে গেলে সেটিকে জল ভরে ভারী করতে হয়। ভিতরের জল বেরিয়ে যেতেই ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ফ্লোটিং গেটটি ভেসে উঠে এক দিকে হেলে পড়ে। এ দিন বেলা ১০টা নাগাদ পুরোপুরি ভেসে ওঠে গেটটি। মোটা রশির সাহায্যে ওই গেটটটিকে প্রায় এক হাজার ফুট দূরের এক নম্বর গেটটির কাছে খুব সাবধানে নিয়ে আসা হয়।

Advertisement

ব্যারাজ সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তা পৌঁছে যায় এক নম্বর লকগেটের সামনে। ফ্লোটিং গেটটি যাতে কোনও ভাবে ব্যারাজের কাঠামোয় ধাক্কা না খায় তার জন্যই খুবই সাবধানতা নেওয়া হয় গোটা প্রক্রিয়াও। দুপুর ১২টা নাগাদ ফ্লোটিং গেটটিকে এক নম্বর গেটের সামনের ব্লকে আটকে দেওয়া হয়। গোটা কাজের তত্ত্বাবধানে থাকা সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুবীরকুমার লাহা বলেন, ‘‘আপাতত সঙ্কট কাটল। সময় বুঝে এক নম্বর গেটটির সম্পূর্ণ মেরামত করা হবে।’’

গত কয়েক দিনে শুকনো ব্যারাজ, জল-জমার পর্ব দেখতে ভিড় জমিয়েছিল জনতা। তা সামলাতে হিমসিম হয়ে যান পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। বারবার মাইকে প্রচার করেও তেমন লাভ হয়নি। এমন ‘উৎসাহে’র নজির এ দিন তার মাত্রা অনেক কম থাকলেও ধাতব গেট কী ভাবে ভাসমান হয়, তা দেখতে ভিড় জমান বেশ কয়েক জন। গেটটি জলে ভেসে উঠতেই উৎসবের মেজাজ সেই জনতার। ফ্লোটিং গেট এক নম্বর লকগেটের সামনে পৌঁছতেও সেই একই হুল্লোড়।

বাসিন্দাদের প্রায় কারও বাড়িতেই এ দিনও জল যায়নি। কিন্তু হুল্লোড় দেখে তা বোঝার উপায় নেই। বরং ব্যারাজের সেতুর রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সুমন্ত ঘোষ, বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্রিয়া বসুরা বলেন, ‘‘আগে কখনও ফ্লোটিং গেট দেখিনি। ঠিক যেন ফেরিঘাটের জেটি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন