‘বহিরাগত’-কে ফের পাঠানো হল বাঁকুড়ায়

একটিকে বুধবারই পাঠানো হয়েছিল বাঁকুড়ার জঙ্গলে। দুর্গাপুরে থেকে যাওয়া অন্য দাঁতালটিকেও বৃহস্পতিবার ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে নিস্তেজ করে ট্রাকে তুলে বাঁকুড়ার জঙ্গলে পাঠাল বন দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০০
Share:

হাতিকে নিস্তেজ করে তোলা হচ্ছে ট্রাকে। ছবি: বিকাশ মশান

একটিকে বুধবারই পাঠানো হয়েছিল বাঁকুড়ার জঙ্গলে। দুর্গাপুরে থেকে যাওয়া অন্য দাঁতালটিকেও বৃহস্পতিবার ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে নিস্তেজ করে ট্রাকে তুলে বাঁকুড়ার জঙ্গলে পাঠাল বন দফতর।

Advertisement

বন দফতরের দাবি, সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল। পুরো প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে মেটার পরে বন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বহিরাগতের খবর পেয়ে আমরা কিন্তু তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়েছি।’’

বুধবার ভোরে দামোদর পেরিয়ে কাঁকসার দিক থেকে দুর্গাপুর শহরে ঢুকে পড়ে দু’টি দাঁতাল। দিনভর শহরের রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায় তারা। হাতি দেখতে ভিড় জমে যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাড়া খেয়ে করঙ্গপাড়া, এবিএল কলোনির জঙ্গল, বিধাননগর হয়ে হাতি দু’টি পৌঁছয় এইচএফসিএল কলোনির জঙ্গলে। বন দফতরের কর্মীরা সেখান থেকে তাদের বের করে বাঁকুড়ায় পাঠানোর পরিকল্পনা করেন। কিন্তু হাতি দু’টি সেখান থেকে বেরিয়ে আড়রা শিবতলার জঙ্গলের দিকে এগোতে থাকে।

Advertisement

পথে বড় দাঁতালটি পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়ে একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজের ক্যাম্পাসে। হাতি বেরিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান ফটক খুলে দেওয়া হয়। বন দফতরের কর্মীদের তাড়া খেয়ে সেটি ঢুকে পড়ে শিবতলার পিছনের জঙ্গলে।

ছোট দাঁতালটি চেষ্টা করেও কলেজ চত্বরে ঢুকতে না পেরে ফের দুর্গাপুরের ভিতরে ঢুকে এফসিআই কলোনির পিছনের জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। দিনভর হাঁটাচলার পরে দাঁতালটি খানিক শান্ত হয়। এর পরেই বাঁকুড়া থেকে আসা বন দফতরের কর্মী সনাতন মুর্মু ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে হাতিটিকে অজ্ঞান করেন। ক্রেন আসে। ট্রাকে চাপিয়ে সেটিকে বুধবারই পাঠানো হয় বাঁকুড়ার জঙ্গলে।

কিন্তু বন দফতর সূত্রে জানা যায়, চিন্তা বাড়তে থাকে বড় দাঁতালটিকে নিয়ে। শুরু হয় খোঁজ। রাতে হাতিটি যাতে জঙ্গল ছেড়ে না পালায় সে দিকেও নজর রাখা হয়। কারণ, লোকালয়ে হাতিটি ঢুকে পড়লে বিপদের সম্ভাবনা ছিল। বৃহস্পতিবার ভোর হতেই ফের শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। দেখা যায়, দাঁতালটি গোপালপুরের কাছের জঙ্গলে রয়েছে। সেটির দেখা মিলতেই ফের ঠিক হয়, এটিকেও অন্য হাতিটির মতোই পাঠানো হবে বাঁকুড়ার জঙ্গলে। ফের তলব পড়ে সনাতনবাবুর। রাস্তা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার ভিতরে ছিল হাতিটি। আড়া টাউনশিপের কাছে তিনি গুলি করেন হাতিটিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে দাঁতালটি। এর পরে সেখানে ট্রাক-ক্রেন পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার জন্য জঙ্গল সরিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়। ট্রাকে তুলে দাঁতালটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাঁকুড়ার জঙ্গলে।

রাজ্য বন দফতরের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ-পশ্চিম) কল্যাণ দাস বলেন, ‘‘হাতিটি এবং সাধারণ মানুষ, কারও কোনও ক্ষতি হয়নি। হাতিটিকে রানিবাঁধের কাছে জঙ্গলে ছাড়া হবে।’’ বন দফতর সূত্রের খবর, হাতিগুলি ভিন্‌-রাজ্য থেকে এসেছে। ডিএফও (দুর্গাপুর) মিলন মণ্ডল জানান, বাঁকুড়া থেকে দামোদর পেরিয়ে হাতি দু’টি দুর্গাপুর শহরে ঢুকেছিল। হাতি দু’টি কোনও ক্ষতি করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন