এ রাস্তাতেই বসবে ফুলের গাছ। নিজস্ব চিত্র
এই শহরে হাঁটতে গেলেই এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে নোংরা ডিঙিয়ে যেতে হয়। অনেক জায়গায় দেখা যায়, মনীষীদের মূর্তিগুলিও মলিন, অভিজ্ঞতা শহরবাসীর। সেই শহর, কাটোয়া এ বার সাজবে ফুলে ফুলে, জানাল বন দফতর। এই উদ্যোগে স্কুল পড়ুয়া, শিক্ষক-সহ সমাজের নানা স্তরের মানুষকে সামিল করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে ‘অরণ্য সপ্তাহ’ উপলক্ষে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে ‘আরবান টাউন প্ল্যান্টেশন স্কিম’ প্রকল্পের আওতায় ১৭৫০টি জ্যাকার্যান্ডা, ১১০০টি সোনালু, ১৯০০টি বিউটি, ১০০০টি মিমুসোপ্স ও ৫২৫টি সারাকা ফুলের চারা রোপণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান-কাটোয়া রোড, কাটোয়া-কৈচর রোড, স্টেডিয়াম পাড়া, পানুহাট রোড, নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউ, সুবোধ স্মৃতি রোড, কান্দি-কাটোয়া রোড ও বিবেকানন্দ পল্লি রোডে সৌন্দর্যায়নের অঙ্গ হিসেবে রাস্তার দু’ধারে ফুল গাছের চারা রোপণ করা হবে।
তবে শুধু রাস্তাই নয়, বিভিন্ন স্কুল ও সরকারি দফতরেও রোপণ করা হবে ফুল-গাছ। এই তালিকায় রয়েছে, দাঁইহাট হাইস্কুল, পানুহাট রাজমহিষী দেবী স্কুল, কাটোয়ার কাশীরাম দাস বিদ্যায়তন, রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের নাম। চারার পরিচর্যায় সামিল হবেন শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। এ ছাড়াও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কাটোয়া ১ ব্লকের কার্যালয়, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাটোয়া ১ ব্লক অফিস, মরাঘাট ও অজয়ের বাঁধ, নিয়ন্ত্রিত বাজার চত্বর, পুলিশ-প্রশাসনের কার্যালয়ে সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে।
তবে যে শহরে সৌন্দর্যায়ন নিয়ে এমন তোড়জোড়, সেই শহরের বর্তমান পরিস্থিতিটা অবশ্য মোটেই আশাপ্রদ নয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। হাসপাতালের সামনে বা স্টেশন বাজার চৌরাস্তা-সহ নানা এলাকায় মনীষীদের মূর্তি রয়েছে। কিন্তু তা অপরিষ্কার। আবার স্টেশন বাজার চৌরাস্তায় পড়ে থাকে বাজারের আবর্জনা। এই পরিস্থিতিতে পিনাকীচরণ দে, নারায়ণচন্দ্র সাহা-সহ শহরবাসীর একাংশের বক্তব্য, ‘‘বর্তমানে শহরে হাল খুবই খারাপ। অত্যন্ত অপরিষ্কার অনেক জায়গা। এই উদ্যোগে যদি কিছুটা হাল ফেরে, তা হলে ভাল।’’
বন দফতরের জেলা আধিকারিক দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘‘প্রকল্পে ‘থিম বেসড বিউটিফিকেশন’-র জন্য নীল রংকে বাছা হয়েছে। তাই নীল ফুলের গাছের আধিক্যই থাকবে বেশি। চারা রোপণের পরে মোটামুটি তিন বছর পরে ফুল ফুটবে।’’ গঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণেও এই কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে আশা তাঁরা। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে ফুলগাছগুলি চারা রোপণের জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে।’’