এমনই হাল ফলকটির। নিজস্ব চিত্র
সম্প্রসারিত পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের উদ্বোধন করেছিলেন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। পানাগড়ের দার্জিলিং মোড়ে প্রায় দু’দশক ধরে জ্যোতিবাবুর নামাঙ্কিত উদ্বোধন-ফলকটি ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তা উপড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। সিপিএমের অভিযোগ, এই কাজ করেছে তৃণমূল।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা খরচে রাজ্য সরকার প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের আমূল সংস্কার করেছিল। ১৯৯৯-র ২৩ জুন ঝকঝকে রাজ্য সড়কের উদ্বোধন করেন জ্যোতিবাবু। দার্জিলিং মোড়ে উদ্বোধনের ফলক পোঁতা হয়। তার পাশে সরকারি জায়গা পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফুলগাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যায়নের কাজ করে পূর্ত দফতর। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই বাগান শুকিয়ে গিয়েছে বহু কাল। পাঁচিলও ভেঙে পড়েছে। তবে রাস্তার পাশে ফলকটি দাঁড়িয়েছিল দিন কয়েক আগে পর্যন্তও।
কিন্তু সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, সম্প্রতি ফলক উপড়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়। সম্প্রতি এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার পাশের জমি সমান করার কাজ চলছে। খোঁড়া মাটি ফেলে রাখা হয়েছে রাস্তার ঠিক পাশে। সেখানেই পড়ে রয়েছে ফলকটি। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অলোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘রাজ্য জুড়েই বাম আমলে থাকা ফলকগুলি সরিয়ে নতুন ফলক বসানো হচ্ছে। দিন চারেক আগে আচমকা দেখা যায়, কে বা কারা জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত ফলকটি ভেঙে দিয়েছে। আমাদের অনুমান, তৃণমূলই এই কাজ করেছে।’’
তবে ফলক নিয়ে চাপানউতোর সিপিএম-তৃণমূলে এই নতুন নয়। বাম আমলে দুর্গাপুরের গাঁধীমোড়ে তথ্যপ্রযুক্তি পার্কটির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর নামাঙ্কিত ফলকও ছিল। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ফের তা উদ্বোধন করেন এবং নতুন ফলক বসানো হয় বলে অভিযোগ সিপিএমের।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষের কাজে আমরা ব্যস্ত। কোথায় কী পুরনো ফলক রয়েছে, তা নিয়ে ভাবার সময় কোথায়? বামেরা এখন রামের শরণ নিচ্ছে। কাজেই ওঁরাই যে কেউ এমনটা করেননি, তার নিশ্চয়তা কোথায়?’’