চারিদিকেই আবর্জনা
আবর্জনায় ভরে গিয়েছে বর্ধমান শহর। রাস্তার ধারে, পাড়ার মোড়ে যে দিকেই তাকাই চোখে পড়ে ডাঁই করে রাখা আর্বজনা। নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। জমে থাকে প্লাস্টিক। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে শহরের আনাচ-কানাচে। স্কুল-কলেজ যেতে সমস্যায় পড়েন পড়ুয়ারা। বর্ধমান স্টেশন চত্বর, নতুনগঞ্জ-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় গেলেই আর্বজনা চোখে পড়ে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাস চত্বরেও জঞ্জাল জমে রয়েছে। কিন্তু সাফাই কর্মীর দেখা পাওয়া মুশকিল। শহরের বেশির ভাগ নোংরা-আর্বজনা ফেলা হয় কালনা গেট এলাকায় একটি জমিতে। কিন্তু সেই জমিতে এখন আর্বজনা উপচে যাওযার উপক্রম। বর্ধমান পুরসভার কাছে আবেদন, শহরের নোংরা ফেলার জন্য একটি জায়গা নির্দিষ্ট করা হোক। বাড়ি-বাড়ি না হলেও অন্তত প্রতিটি পাড়ায় গিয়ে নিয়মিত আর্বজনা সংগ্রহ করার আশু প্রয়োজন। তাহলে হয়ত এই ঐতিহ্যশালী শহরকে সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব।
রূপকুমার মুখোপাধ্যায়, রাজ কলেজ, প্রথম বর্ষ।
খোসবাগানে যাতায়াত চলে এভাবেই। কালনা গেটের কাছে খোলা আবর্জনার স্তুপ। ছবি: উদিত সিংহ।
যানজটই সমস্যা শহরের
বর্ধমানের মূল সমস্যা জনসংখ্যার আধিক্য। রাস্তাঘাট সবসময়েই লোকে উপচে পড়ছে। এটাই এক বিরল শহর যেখানে পথচারীর জন্য ফুটপাথ নেই, গাড়ি বা মোটরবাইকের জন্য নির্দিষ্ট পার্কিং নেই। ফলে রাস্তার ভগ্নাংশ তাদের দখলে। পারলে পাশ কাটিয়ে যাও, নাহলে ভাগো— এটাই তাদের ভঙ্গি। এখানে গাড়ির চালক কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে গাড়ি চালাকে ভয় পান না, কিন্তু খোসবাগানকে কুর্নিশ করেন দু’বেলা। খোসবাগান স্টেট ব্যাঙ্কের সামনে মিনিট খানেক দাঁড়ালে মনে হবে, বোলপুরের পৌষমেলায় পা রাখার জায়গা খুঁজছেন। এভাবেই বর্ধমান আরও বাড়বে। বহুতল শপিং মলে সব টালমাটাল হবে। কি করে যানজট মেটানো যায় তা জানা নেই। সে ব্যাবস্থা আধিকারিকদেরই নিতে হবে।
স্বপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, পাকমারা গলি।
টোটো নিয়ন্ত্রণ জরুরি
বর্ধমান শহর এখন একটি পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে চলেছে। একদা রিকশার শহর বলে পরিচিত এই জনপদে এখন শুধুই টোটো গাড়ির দাপাদাপি। ফলে ভাল যেমন হয়েছে, মন্দও হয়েছে। টোটো গাড়ি তুলনায় সস্তা। যে দূরত্ব থেকে বর্ধমান স্টেশন যেতে ৪০ টাকা রিকশা ভাড়া লাগে, সেই দূরত্ব অতিক্রম করতেই টোটো গাড়িতে মাত্র ১০ টাকা ভাড়া লাগে। সময়ও কম লাগে। কিন্তু একই সঙ্গে শহরে প্রায় এক হাজার টোটো চলার কারণে রাস্তায় যানজট বাড়ছে। টোটোর গতি রিকশার তুলনায় বেশি হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটছে। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন রিকশা চালকেরা। দৈনিক ভাড়ার সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। অথচ বর্ধমান শহরে বেশিরভাগ রিকশাই পুরসভা অনুমোদিত। পুরসভার উচিত টোটো গাড়ি ও রিকশার মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করা। কয়েকটি নির্দিষ্ট রুটে টোটো চলাচল করুক। বাকি রুটে রিকশা। এই ভাবে ভাবলে হয়ত অনেক গরিব পরিবার বেঁচে যেতে পারে।
দীনেশ চন্দ্র সরকার, বিধানপল্লি, বর্ধমান।
মান বাড়ুক খেলার
ভলিবল ও বাস্কেটবলে বর্ধমানের ছেলেমেয়েরা সাফল্য পেলেও অন্য খেলায় আসানসোল, দুর্গাপুরের ছেলেমেয়েরাই বেশি সফল। বর্ধমানে কোচিং ক্যাম্পের উন্নয়ন খুবই জরুরি। ফুটবলেও তেমন ভাল ফল দেখা যাচ্ছে না। বাইরের ছেলেরা খেলতে আসছে। স্থানীয় ছেলেদের খেলায় সুযোগ দেওয়ার জন্যও অ্যাসোসিয়েশন আইন করেছে। কিন্তু ফুটবলের ক্ষেত্রে ছেলেরা ক্লাবের জন্য খেলতে যতটা আগ্রহী, ততটা জেলার হয়ে খেলায় নয়। এর সঙ্গে টাকার ব্যাপারটাও জড়িয়ে আছে। ফুটবলে বর্ধমানের ভাল ফল না হওয়ার এটাও একটা কারণ। এই পরিস্থিতিতে কোচিং ক্যাম্পে আরও সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও পুরসভাকেও।
রথীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, টাউন হল পাড়া।