ফের বৈঠকেও জট কাটল না গ্যাস সংস্থায়

বটলিং প্ল্যান্টে ট্রাকে সিলিন্ডার তোলা-নামানোয় যুক্ত ঠিকাকর্মীদের একাংশের অসহযোগিতার জেরে দিনে গড়ে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা হারে ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ আইওসিএল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০০:২২
Share:

থমকে: ঠিকাকর্মীদের নিয়ে সমস্যার জেরে সরবরাহ বন্ধ। দুর্গাপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস ও তেল সংস্থার সামনে তাই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্যাঙ্কার। মঙ্গলবার। ছবি: বিকাশ মশান

এক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধই রয়েছে দুর্গাপুরে আইওসিএলের বটলিং প্ল্যান্ট থেকে। ফলে, গ্যাসের সঙ্কট শুরু হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলায়। প্রশাসনের তরফে বারবার বৈঠকের পরেও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। মঙ্গলবার আসানসোলে জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বৈঠক ডাকেন। কিন্তু তার পরেও রাত পর্যন্ত অচলাবস্থা কাটার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।

Advertisement

বটলিং প্ল্যান্টে ট্রাকে সিলিন্ডার তোলা-নামানোয় যুক্ত ঠিকাকর্মীদের একাংশের অসহযোগিতার জেরে দিনে গড়ে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা হারে ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ আইওসিএল কর্তৃপক্ষের। বরাতপ্রাপ্ত ২৮ জন পরিবহণকারীর মোট ২২৯টি ট্রাক চলে প্ল্যান্টে। চার মাস ধরে পরিস্থিতি না বদলানোয় ৭ জুন থেকে পরিবহণকারীদের তরফে ১১২ জন ঠিকাকর্মীর মধ্যে ৮৫ জনের গেটপাস বাতিল করা হয়। তখন থেকেই ঠিকাকর্মীদের বিক্ষোভ চলছে। প্ল্যান্ট চালু করার জন্য দফায়-দফায় বৈঠক করেছে প্রশাসন। কিন্তু ফল হয়নি।

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, এ ভাবে একতরফা ঠিকাকর্মীদের বাতিল করা যায় না। আগে তাঁদের সবাইকে কাজে ফেরানো হোক, তার পরে আলোচনার মাধ্যমে বাকি সমস্যা মেটানো হবে। প্রথম দিকে অনড় থাকলেও পরে পরিবহণকারীরা জানান, ২৬ জন বাদে বাকিদের তাঁরা ফিরিয়ে নিতে রাজি। তাঁদের দাবি, ৮ জনের অবসরের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। দু’জন শারীরিক ভাবে অক্ষম। এ ছাড়া ১৮ জনের বিরুদ্ধে প্ল্যান্টে নানা সময়ে অশান্তি পাকানো-সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সবাইকে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকে।

Advertisement

পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, হুগলি জেলার প্রায় দু’শো গ্যাস এজেন্সির মাধ্যমে এই প্ল্যান্ট থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এজেন্সিগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গ্রাহকদেরই ঠিক সময়ে সিলিন্ডার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নতুন সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে হয়েছে। অবিলম্বে সমস্যা না মিটলে গ্যাসের চরম সঙ্কট তৈরি হবে বলে জানান তাঁরা। সমস্যা মেটাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে মঙ্গলবার আসানসোলে বৈঠকে বসেন জেলাশাসক। সেখানেও দু’পক্ষ নিজের দাবিতে অনড় থাকে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আজ, বুধবার থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে কি না, তা রাত পর্যন্ত তা অনিশ্চিত। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘সবাইকে ফেরানোর প্রস্তাবই আবার প্রশাসনের তরফে দেওয়া হয়েছে। পরিবহণকারীরা রাত পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন