এক-ছবি: আসানসোলে এখনও রয়ে গিয়েছে তোরণ।
দুর্গাপুজোর সময়ে শহরের নানা জায়গায় তোরণ বসিয়েছিলেন পুজোর উদ্যোক্তারা। এর থেকে উদ্যোক্তাদের লক্ষ লক্ষ টাকা আয়ও হয়েছে তাঁদের। কিন্তু উৎসবের পরে বিজ্ঞাপনগুলি সরিয়ে নিলেও রয়ে গিয়েছে বাঁশের কাঠামো। শহরবাসীর অভিযোগ, এর ফলে যাতায়াতে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়ছে। এই ছবি আসানসোল এবং দুর্গাপুর শহরের। যদিও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের দাবি, পুজো কমিটিগুলিকে অবিলম্বে তোরণগুলি খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুজো উপলক্ষে আসানসোলের জিটি রোড, বার্নপুর রোড, কোর্টরোড, হাটন রোড-সহ বড় রাস্তাগুলির দু’পাশে তৈরি হয় অসংখ্য অস্থায়ী তোরণ। শহরবাসী জানিয়েছেন, তোরণগুলি মূল রাস্তা পাশেই বসানো হয়। এমনকী ফুটপাথও দখল করে নেওয়া হয়। ফলে পথচারীদের যাতায়াতে সমস্যা। সমস্যা হয় গাড়ি চলাচলেও। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে। বাসিন্দাদের দাবি, পুজোর কয়েক দিন মানিয়ে নেওয়া গেলেও উৎসবের পরেই এগুলি খুলে নেওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, একাদশীর পরেই তোরণগুলি খুলে নেওয়ার জন্য পুজোর উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কেউ কেউ সেই নির্দেশ মানলেও অনেক জায়গায়ই এখনও খোলা হয়নি। আসানসোলের বার্নপুর রোড ও কুলটির ডিভিসি কলোনি এলাকায় জিটি রোডের ধারে এখনও প্রচুর তোরণ রয়ে গিয়েছে।
একই অবস্থা দুর্গাপুরেও। —নিজস্ব চিত্র।
এস প্রসঙ্গে কমিশনারেটের এডিসিপি (ট্র্যাফিক) রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা পুজো কমিটিগুলিকে অবিলম্বে তোরণ খুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। দু’-এক দিনের মধ্যেই তোরণগুলি খুলে ফেলা হবে।’’ উদ্যোগী হয়েছে আসানসোল পুরসভাও। পুরসভার চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল বলেন, ‘‘রবিবারের মধ্যে তোরণগুলি খোলা না হলে আমরাই সোমবার থেকে অভিযান শুরু করব।’’
প্রায় একই অবস্থা দুর্গাপুরেও। বহু জায়গাতে এখনও তোরণের বাঁশের খাঁচা রয়ে গিয়েছে। দ্রুত সে সব সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দারা। দ্রুত মণ্ডপ খোলার কাজ চললেও তোরণের খাঁচা খোলার কাজে গতি আসেনি বলে অভিযোগ। ডিপিএল কলোনি, গ্যামন ব্রিজ, দুর্গাপুর বাজার, সিটি সেন্টার— সব জায়গায় প্রায় একই অবস্থা।
ডিপিএল কলোনির হাইস্কুলের কাছে, গ্যামনব্রিজের কাছে বাঁশের খাঁচা নজরে এসেছে। দুর্গাপুর বাজারের এএসবি মোড় থেকে বাজার ঢোকার রাস্তায় পর পর তিনটি বাঁশের খাঁচা এ দিনও দেখা গিয়েছে। এর ফলে রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে সমস্যায় হচ্ছে বলে অভিযোগ গাড়ি চালকদের। কোনও কোনও জায়গায় রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার কাঠামো সরানোর পরে রাস্তার পাশের গর্ত মেরামত না করায় অসতর্ক হলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে শহরবাসীর অসুবিধার কথা ভেবে দ্রুত তোরণের কাঠামো সরিয়ে ফেলার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুর পুরসভার সড়ক দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুজো উদ্যোক্তাদের শহরবাসীর অসুবিধার কথা মাথায় রেখে দ্রুত বাঁশের কাঠামো সরিয়ে ফেলা এবং রাস্তার গর্ত বুজিয়ে দিতে বলা হয়েছে।’’