বাউলগান, কীর্তনে জমল ঘাগরবুড়ি মেলা

জনশ্রুতি অনুসারে প্রায় তিনশ বছর আগে দেবীর পুজো শুরু হয়। কালক্রমে সেই আসানসোলের ঘাগরবুড়ি মন্দিরের ফলাহারিণী কালী পুজোকে কেন্দ্র করেই বসতে শুরু করে ৩ দিনের মেলা ও বার্ষিক উৎসব। এ বছর শুক্রবার ২৪ ঘণ্টা হরিনাম সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে মেলার শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০০:৩৮
Share:

আসানসোলে ঘাগরবুড়ি মেলায়।—নিজস্ব চিত্র।

জনশ্রুতি অনুসারে প্রায় তিনশ বছর আগে দেবীর পুজো শুরু হয়। কালক্রমে সেই আসানসোলের ঘাগরবুড়ি মন্দিরের ফলাহারিণী কালী পুজোকে কেন্দ্র করেই বসতে শুরু করে ৩ দিনের মেলা ও বার্ষিক উৎসব। এ বছর শুক্রবার ২৪ ঘণ্টা হরিনাম সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে মেলার শুরু হয়। রবিবার রাতে সেই মেলারই ছিল শেষ দিন।

Advertisement

উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, পুজো উপলক্ষে শনিবার মহিশীলা কলোনির এফএফ রোড দুর্গামন্দির থেকে ঘাঘরবুড়ি মন্দির পর্যন্ত একটি শোভাযাত্রারও আয়োজন করা হয়। শিল্পাঞ্চলের অত্যন্ত জনপ্রিয় এই পুজোটির বর্তমান সেবাইত আসানসোলের আগুরিপাড়ার চক্রবর্তী পরিবার। ওই পরিবারেরই সদস্য বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী দেবী পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে জানান, বংশানুক্রমে শোনা যায় পরিবারের এক পূর্ব পুরুষ আসানসোল সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নুনিয়া নদের ধারে একাধিক আদিবাসী গ্রামে ভিক্ষা করে দিন গুজরান করতেন। এক বছর এলাকায় মহামারী দেখা যাওয়ায় কোনও ভিক্ষা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন সেই পূর্ব পুরুষ। জনশ্রুতি অনুসারে জানা যায়, তখনই লাঠি হাতে ঘাগরা পরিহিতা এক বৃদ্ধা ওই পূর্বপুরুষের হাতে ৩টি শিলাখণ্ড দিয়ে দেবীর পুজো শুরু করতে বলেন। পয়লা মাঘ দেবীর আবির্ভাব দিবস বলে মানুষের বিশ্বাস। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “দেবীর নির্দেশেই ঘাঘরাবুড়ি চণ্ডী হিসাবে আজও আমরা পুজো করি।’’ দেবীকে ফলাহারিণী কালী হিসেবে দোসরা জৈষ্ঠ্য পুজো করা হয়। এ দিন ৯ রকম ফল দিয়ে পুজোর ভোগও তৈরি করা হয়।

২৯ বছর আগে আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন এলাকার মানুষ একজোট হয়ে তৈরি করেন ধর্মচক্র সেবা সমিতি। ওই বছর থেকেই পুজো উপলক্ষে মেলা, শোভাযাত্রা ও লোক-সংস্কৃতির আসর বসছে। সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কালীপাহাড়ির রাধাগোবিন্দ সিংহ, আসানসোল কোর্টমোড় এলাকার চিকিৎসক বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়, মহিশীলার হরিদাস গড়াই, ধাদকার রুপেশ সাউরা জানান, মন্দির এলাকায় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সমিতির সর্বক্ষণের কর্মীরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন।

Advertisement

মেলা উপলক্ষে জমজমাট মন্দির চত্বরও। রবিবার বাউল, ভজন-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন