এক পঞ্চায়েত কর্মীর এক বছর চার মাসের বেতন ও অন্যান্য বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। অন্ডালের খান্দরা পঞ্চায়েতের ঘটনা।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, খান্দরার বাসিন্দা বুদ্ধদেব সরকার নামে এক ব্যক্তি বর্তমানে কার্যনিবাহী সহায়ক (এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট) পদে কর্মরত। ২০১৪-র লোকসভা ভোটের ঠিক আগের দিন তাঁকে জামুড়িয়ার শ্যামলা গ্রাম পঞ্চায়েতে বদলি করা হয়। বুদ্ধদেববাবু জানান, তিনি ২০১৫-র জানুয়ারিতে ওই পঞ্চায়েতে কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন সেখানে কার্যনিবাহী সহায়ক পদে ইতিমধ্যেই এক জনকে নিয়োগ করা হয়ে গিয়েছে। বুদ্ধদেববাবু ফের খান্দরা পঞ্চায়েতেই কাজে যোগ দেন। কিন্তু ২০১৪-র নভেম্বর থেকে ২০১৬-র ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেতন ও অন্যান্য পাওনা হাতে মেলেনি বলে জানান বুদ্ধদেববাবু।
শেষমেশ ২০১৫-র ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বুদ্ধদেববাবু। বুদ্ধদেববাবুর আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় তাঁর মক্কেলের বদলির নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। সেই সঙ্গে এক বছর চার মাস ধরে পড়ে থাকা বেতন ও অন্যান্য পাওনা টাকা মিটিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। বুদ্ধদেববাবু জানান, চলতি বছরের মার্চ মাসে তিনি সমস্ত বকেয়া টাকা পেয়ে গিয়েছেন। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাস থেকে ঠিক সময়েই বেতন দেওয়া হবে বুদ্ধদেববাবুকে।
বুদ্ধদেববাবুর অভিযোগ, তিনি এক সময় সক্রিয় সিপিএম কর্মী ছিলেন। তার জেরেই রাজনৈতিক আক্রোশবশত তৃণমূল নানা ভাবে তাঁর কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩ সালে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হন বুদ্ধদেববাবু। ২০০৬-এ কাজে যোগ দেওয়ার সময় পঞ্চায়েতের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরে বুদ্ধদেববাবু পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক রং দেখে কাজ করছেন বলে অন্ডালের বিডিও-র কাছে অভিযোগ করে তৃণমূল। বুদ্ধদেববাবু বলেন, ‘‘সরকার পরিবর্তনের পর আমাকে এই নিয়ে তিন বার বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। দু’বার বদলি স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।’’
যদিও রাজনৈতিক আক্রোশের অভিযোগ স্বীকার করেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্র বলেন, “আদালতের নির্দেশ শুনেছি। উনি যে পক্ষপাতদুষ্ট সেটা ঠিক সময়ে প্রমাণ হয়ে যাবে।’’