তথ্য ভাঁড়িয়ে ভাতা, ফেরালেন লোকশিল্পীরা

কয়েকমাস আগে পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণব বিশ্বাস ২৯ জন লোকশিল্পীকে শুনানিতে ডেকেছিলেন। অভিযোগ ছিল, তাঁরা পারিবারিক আয় নিয়ে ভুল তথ্য প্রশাসনের কাছে পেশ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০১:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেউ চাকরি লুকিয়ে, কেউ আয়ের তথ্য বেমালুম চেপে সরকারি ভাতা নিচ্ছিলেন। ধরা পড়ায় লোকশিল্পীদের সব টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

কয়েকমাস আগে পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণব বিশ্বাস ২৯ জন লোকশিল্পীকে শুনানিতে ডেকেছিলেন। অভিযোগ ছিল, তাঁরা পারিবারিক আয় নিয়ে ভুল তথ্য প্রশাসনের কাছে পেশ করেছেন। বা অন্য পেশায় যুক্ত থেকেও ভাতা তুলছিলেন। তাদের প্রত্যেককেই ভাতা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা তথ্য ও সংস্কৃত দফতরের আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী বলেন, “ওই ২৯ জনের কাছ থেকে সুদসমেত ভাতা ফেরত নেওয়া হয়েছে। পরে আরও দু’জন এসে ভাতা ফিরিয়ে দিয়েছেন।’’

তথ্য সংস্কৃতি দফতরের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য সরকারের তরফে মাসিক ভাতা পেতে হলে লোকশিল্পীদের বছরে পারিবারিক আয় দেড় লক্ষ টাকার কম হতে হবে। তেমনি সরকারি, বেসরকারি বা অন্য কোনও পেশার স্থায়ী কর্মী হলে তাঁরা ওই ভাতা পাবেন না। ওই নিয়ম চালু হওয়ার পরেও ওই ৩১ জন লোকশিল্পী মাসের পর মাস ভাতা তুলছিলেন বলে অভিযোগের চিঠি জমা পড়ে দফতরে। চিঠি পাওয়ার প্রণববাবু সবাইকে ডেকে পাঠান শুনানিতে। পূর্বস্থলীর বাউলশিল্পী ভারতী বাগ কিংবা খণ্ডঘোষের সুকুমার হাজরাদের যদিও দাবি, “আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানতাম না। প্রশাসন আমাদের জানানোর পরেই সুদ সমেত টাকা ফেরত দিয়েছি।” রাজ্য সরকার প্রতি মাসে তথ্য সংস্কৃতি দফতরে নথিভুক্ত লোকশিল্পীদের এক হাজার টাকা করে ভাতা দেয়। ওই নির্দেশের পরে কাউকে তিন বছর, কাউকে এক বছরের ভাতা ফেরাতে হয়েছে।

Advertisement

পরবর্তীতে লোকশিল্পীরা যাতে তথ্য গোপন করে ভাতা পাওয়ার ফর্ম পূরণ না করেন, তার জন্য সতর্কতা জারি করেছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। দফতরের তরফে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে— ১) আয় ও পেশা সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র পূরণের সময় পারিবারিক আয়ের বিষয়ে অনেক শিল্পী অবাস্তব তথ্য দিচ্ছেন। ২) বারবার সতর্ক করার পরেও অনেকে চাকরি সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে যাচ্ছেন। তারপরেই বলা হয়েছে, ‘গোপন বা ভুল তথ্য দিয়েছেন, প্রমাণ হলে সচিত্র পরিচয়পত্র বাতিল এবং ভাতা সুদ সমেত ফেরত দিতে হতে পারে’। কুশলবাবু বলেন, “আমরা লোকশিল্পীদের কাছে নতুন করে আয় ও পেশা সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র নিতে শুরু করেছি। ঘোষণাপত্র ঠিক আছে কি না খতিয়ে দেখা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন