আহতকে হাসপাতালে পাঠাচ্ছে পুিলশ। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
এলাকায় কার আধিপত্য থাকবে, সে নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হল অন্ডালের কাজোড়ায়। শনিবার সকালে এই ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দু’জন। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তৃণমূল যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসিএলের খনি থেকে পরিবহণের সময়ে কয়লা ওঠানামার কাজে কারা শ্রমিক সরবরাহ করবে, সে নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই এলাকার দু’টি তৃণমূলের গোষ্ঠীর মধ্যে চাপা অশান্তি চলছিল। তার সঙ্গে রয়েছে একটি পার্টি অফিস নিয়ে চাপানউতোর। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে কাজোড়ার কে সি পাল মাধবপুর ১১ নম্বর এলাকায় সিপিএমের একটি অফিস দখলে নিয়েছে তৃণমূল। সেখানে দলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্রের কিচু অনুগামী বসেন। কিন্তু দলের নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য রুপেশ যাদবের ঘনিষ্ঠ কয়েক জন সেই অফিসটির দখল নিতে চাওয়ায় গোলমাল বেধেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ তৃণমূলের ওই দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে মারপিট বেধে যায়। কয়েক রাউন্ড গুলিও চলে বলে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদেরও ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে বাসিন্দারা দাবি করেন। পুলিশ যদিও তা মানতে চায়নি। এডিসিপি (পূর্ব) শুভঙ্কর মাইতি বলেন, ‘‘দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলায় দু’জন জখম হয়েছেন। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’
অন্ডাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি কাঞ্চনবাবু অবশ্য দলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার কোনও গোষ্ঠী নেই। কয়লা ওঠানামার কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ জেলা পরিষদ সদস্য রুপেশবাবু আবার দাবি করেন, ‘‘আমাদের দলের কিছু কর্মী একটি বন্ধ পড়ে থাকা ঘর পরিষ্কার করছিলেন। পরে এক জন কর্মী বাদে বাকি সকলে বাড়ি চলে যান। এর পরেই সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই কর্মীর উপরে চ়ড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’
জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি (শিল্পাঞ্চল) ভি শিবদাসনও দোষ চাপিয়েছেন সিপিএমের উপরেই। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই এলাকায় সিপিএমের বহু লোকজন আমাদের দলে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু সিপিএমে থেকে যাওয়া কিছু দুষ্কৃতী এ দিন আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে। পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’ অন্ডালের সিপিএম নেতা মলয় বসুরায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কী নিয়ে কাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে, এলাকার সকলেই জানেন। তৃণমূল নেতাদের এমন দাবি হাস্যকর।’’