দরপত্র বের হতেই বর্ধমানের ভিতর দিয়ে যাওয়া জিটি রোডের দু’ধারে দখল করে থাকা দোকান ও বাড়ি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করে দিল পূর্ত দফতর (সড়ক)। চার লেনের রাস্তা তৈরির জন্য সোমবার দরপত্রটি প্রকাশ করেছে পূর্ত দফতর। জানা গিয়েছে, শুধু রাস্তা চওড়া নয়, রাস্তার দু’ধারে সৌন্দর্যায়ন এবং নবাবহাট ও উল্লাসে নতুন করে দুটি গেট তৈরি করবে পূর্ত দফতর। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে গোটা রাজ্য জুড়ে উন্নয়ন হচ্ছে। তারই অঙ্গ বর্ধমানের জিটি রোড চওড়া ও সৌন্দর্যায়ন।’’
জানা গিয়েছে, দুটি পর্যায়ে সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। প্রথমে উল্লাস থেকে বীরহাটা সেতু পর্যন্ত চার কিলোমিটার এবং নবাবহাট থেকে পঞ্জাবি পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা চওড়া ও সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ চলবে বীরহাটা থেকে রেল সেতু পর্যন্ত। পূর্ত দফতর (সড়ক) সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ের কাজের জন্য ১১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে পূর্ত দফতর রাস্তা চওড়া, সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের জন্য খরচ করবে ৭৬ কোটি টাকা। রাস্তায় আলো লাগানোর জন্য পূর্ত দফতর (বিদ্যুৎ) পেয়েছে ৫ কোটি টাকা। এ ছাড়াও বিদ্যুতের খুঁটি, ট্রান্সফর্মার সরানোর জন্যেও পূর্ত দফতর (সড়ক) রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। পূর্ত দফতর (সড়ক)-র এক কর্তার কথায়, ‘‘বর্ধমান শহরে ঢোকার মুখে উল্লাস ও নবাবহাটে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা সম্প্রতি দুটি গেট তৈরি করেছিল। আমরা সেই গেট দুটি ভেঙে ফের নতুন ভাবে তৈরি করব। এর জন্যেও আমাদের দফতর তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।’’
গত ডিসেম্বর, জানুয়ারিতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে ওই রাস্তার সমীক্ষা করে পূর্ত দফতর। রিপোর্টে দেখা যায়, নবাবহাট থেকে পঞ্জাবি মোড় পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ জন ব্যবসায়ী জায়গা দখল করে রেখেছেন। উল্লাস থেকে বীরহাটা সেতু পর্যন্ত ১৫টি বাড়ির কিছু অংশও পূর্ত দফতরের জায়গায় রয়েছে। অস্থায়ী ঘর রয়েছে দু’শোর কাছাকাছি। পূর্ত দফতর (সড়ক)-র নির্বাহী বাস্তুকার ভজন সরকার বলেন, ‘‘কাজ করতে গিয়ে কোনও দখলদার থাকলে তুলে দেওয়া হবে। আমরা দখলদার ও গাছের চিহ্নিতকরণ শুরু করেছি।’’ মাস দুয়েকের মধ্যেই কাজ শুরু করা যাবে বলেও তাঁদের আশা।
পূর্ত দফতরের দাবি, বর্তমানের ১০ মিটার রাস্তা সংস্কারের পর দাঁড়াবে ১৫ মিটারে। এ ছাড়াও রাস্তার দু’ধারে টোটো, রিকশা, সাইকেল নিয়ে যাতায়াতের জন্য সাড়ে পাঁচ মিটার চওড়া রাস্তা থাকবে। বাস-গাড়ি দাঁড়ানোরও জায়গা থাকবে। নতুন ভাবে বড় নর্দমা করে তার নীচ দিয়ে কেবলের তার নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। নর্দমার উপরটা ফুটপাথ করে দেওয়া হবে। তার সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্বের ব্যবধানে ফুলের বাগান, বসারও ব্যবস্থা করা হবে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘কারও কোনও ক্ষতি না করে দ্রুত কাজটি করতে চাই আমরা।’’