টানা বৃষ্টিতে ভাঙল বহু বাড়ি, বন্ধ রাস্তা

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জেলার বেশ কিছু এলাকা। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬১৫টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। তবে এই বৃষ্টির ফলে আমন ধান চাষে সুবিধা হবে বলে কৃষি দফতরের কর্তারা মনে করছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০০:০৭
Share:

জলভাসি বর্ধমান। বৃষ্টিতে ডুবল গ্রাম। কাটোয়া ১ ব্লকের হরিপুরে।

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জেলার বেশ কিছু এলাকা। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬১৫টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। তবে এই বৃষ্টির ফলে আমন ধান চাষে সুবিধা হবে বলে কৃষি দফতরের কর্তারা মনে করছেন।

Advertisement

বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভাতার, মেমারি, কালনা, কাটোয়া ও বর্ধমান শহরের নানা জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বর্ধমান-কাটোয়া রোডে নরজার কাছে খড়ি নদীর উপরে একটি সেতুর আশপাশে ফাটল দেখা দেওয়ায় সেখান দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই রাস্তারই দুরমুট, শ্রীখণ্ড-সহ নানা জায়গায় জল জমে যাওয়ায় গাড়ি চালানো যাচ্ছে না বলে চালকেরা জানান। নানা রুটে বাস চলাচল কমে যাওয়ায় যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।

বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুর মাঠ, রসিকপুর-সহ কয়েকটি জায়গায় জল জমেছে। কাটোয়ায় প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৫০টি পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়ায় তাদের একটি স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। শহরের নানা দোকান ও প্রতিষ্ঠানে জল ঢুকে পড়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। কাটোয়ার পুরপ্রধান অমর রাম ত্রাণ বিলি করেছেন। এই মহকুমার নানা গ্রামেও জল জমে নাজেহাল অবস্থা বাসিন্দাদের।

Advertisement


ভেঙে পড়েছে বাড়ি। কালনার নান্দাইয়ে।

কালনা শহরের কামারশালা গলি, বৈদ্যপুর মোড়, নতুন বাসস্ট্যান্ড, যোগীপাড়া-সহ বেশ কিছু জায়গায় জল জমে যায়। কালনার নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকায় ৭৪টি মাটির বাড়ি ধসে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টির জেরে হাতিপোতা, মির্জাপুর, দুর্গাপুর, কুতিরডাঙা, ঘুঘুডাঙা, নতুনগ্রাম, দুপসা, খাপুর, হাটতলা এবং গাবতলা এলাকায় মাটির বাড়িগুলি ধসে পড়েছে। শনিবার সকালে এই বিপর্যয়ের খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন পূর্বস্থলীর বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। সেই মতো গ্রামগুলি ঘুরে তালিকা তৈরি করেন কালনা ১ ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সেলিম শেখ। তিনি জানান, রমজান মাসে আচমকা এই বিপর্যয়ে অনেকেই বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কিছু শুকনো খাবার বিলি করা প্রয়োজন বলে মন্ত্রীকে জানানো হচ্ছে।


জলমগ্ন ভাতার।

পূর্বস্থলীর নাদনঘাট-সহ বহু এলাকায় জল জমে গিয়েছে। পূর্বস্থলী ২ ব্লক কার্যালয়েও জল ঢুকে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে সব্জি চাষের।’’ কৃষি দফতরের অবশ্য আশা, এই বৃষ্টি আমন চাষে সাহায্য করবে। তবে মাঠে বেশি জল জমলে ধান রোয়া পিছিয়ে দিতে হবে। বাঁকা, খড়ি, কুনুর-সহ নানা নদীতে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে। তবে দামোদর বা ডিভিসি সেচখালে এখনও জল বাড়েনি।|

রবিবার ছবিগুলি তুলেছেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়, মধুমিতা মজুমদার ও উদিত সিংহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন