খরচা দ্বিগুণ, ভোগান্তিও

কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ দিবসে ভিড় জমিয়ে সুনসান জেলা

বর্ধমানের সঙ্গে হুগলি, বাঁকুড়ার যোগসূত্র বাঁকুড়া মোড়। প্রতিদিন ২৪৫টি বাস চলে। এ দিন একটিও ছিল না। তেলিপুকুর মোড়ের আশপাশেও পিক আপ ভ্যান, টোটোই ছিল ভরসা। মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মলিনা দাস, শেখ আব্বাসদের কথায়, “ডাক্তার দেখতে এসেছিলাম। তিন গুণ খরচা হল।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০২:২৮
Share:

সুনসান বর্ধমানের আলিশ বাসস্ট্যান্ড।

জেলায় প্রায় ৯০০টি বাস চলে। শুক্রবার পথে দেখা গেল ৬০-৭০টিকে। বাকি বাস গিয়েছে কলকাতায়, তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে। ফলে দিনভর যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের শিকার হলেন যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, গত চার-পাঁচ দিন ধরেই বাসের সংখ্যা কমছিল। প্রশাসন বিকল্প ব্যবস্থার কথা বললেও কার্যত তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।

Advertisement

নবাবহাট-উল্লাস বাসস্ট্যান্ড

এই দুটি বাসস্ট্যান্ড থেকে দিনে ছ’শোরও বেশি বাস চলে। এ দিন মেরেকেটে গোটা তিরিশেক বাস দেখা যায়। তাও চালাতে নারাজ বাসকর্মীরা। তাঁদের কথায়, “রাস্তায় লোক কোথায়? বাস চালিয়ে টাকা উঠবে না।” গলসি থেকে ট্রেকার, অটোয় এসে নবাবহাটে বাসের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন আমিনা বেগম। গন্তব্যস্থল রায়না। তিনি বলেন, “চরম ভোগান্তি। কয়েকঘন্টা দাঁড়িয়ে আছি।’’

Advertisement

তেলিপুকুর-বাঁকুড়া মোড়

দুর্ভোগ: মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে বাস ধরতে হুড়োহুড়ি।

বর্ধমানের সঙ্গে হুগলি, বাঁকুড়ার যোগসূত্র বাঁকুড়া মোড়। প্রতিদিন ২৪৫টি বাস চলে। এ দিন একটিও ছিল না। তেলিপুকুর মোড়ের আশপাশেও পিক আপ ভ্যান, টোটোই ছিল ভরসা। মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মলিনা দাস, শেখ আব্বাসদের কথায়, “ডাক্তার দেখতে এসেছিলাম। তিন গুণ খরচা হল।’’

কাটোয়া-কালনা

একে হাতেগোনা বাস, তাতেও বাদুরঝোলা ভিড়। ফলে ট্রেকার, অটোই ছিল ভরসা। যাত্রীদের কথায়, কালনা থেকে কুসুমগ্রাম, বর্ধমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ রুটের বাস তুলে নেওয়া হয়। সুলতানপুর পঞ্চায়েত থেকেই ১৭টি বাস নেওয়া হয়। কাটোয়া থেকে বর্ধমানে ৮০টি বাস চলে। শুক্রবার চলেছে ১০টি। একই অবস্থা মেমারি রুটে। কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে মন্তেশ্বরের অমরনাথ ঘোষ বলেন, “মেমারি রুটের বাস নেই। দ্বিগুণ খরচ হয়ে গেল।” বর্ধমান-কালনা রুটের আয়মাপাড়ার বাসিন্দা সুজয় হাওলি বলেন, “দুধ বিক্রি করতে এসে ফেঁসে গেলাম। কী ভাবে যে বাড়ি যাব!”

লাভের কড়ি

বাস না থাকায় যাত্রী-দুর্ভোগ হলেও পকেট মোটা হয়েছে পিক-আপ ভ্যান, টোটো চালকদের। তেলিপুকুর মোড়ে এক পিক-আপ ভ্যানের চালক বলেন, “অন্য দিন মাল নিয়ে যাই। আজ যাত্রী তুলেছি। মনে হচ্ছে, হাজার দু’য়েক টাকা পকেটে আসবে।” বেশির ভাগ টোটো চালক কলকাতায় গেলেও যাঁরা ছিলেন, তাঁদের লাভ ভালই হয়েছে। গুসকরা লাগোয়া বর্ধমান-সিউড়ি জাতীয় সড়কে (২বি) ৮ জন নিয়েও টোটো চলেছে। যাত্রীরা জানান, গুসকরা শহরে ১০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মঙ্গলকোট-আউশগ্রাম-ভেদিয়া গেলে মাথা পিছু ৪০-৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে।

দোকানে মাছি

লোকজন না থাকায় ব্যবসার হাল খারাপ। দোকানদারদের দাবি, অনেকে সারা দিন মাছি তাড়িয়েছেন। অফিস-কাছারিতেও লোক ছিল হাতে গোনা। ব্যবসায়ীদের কথায়, “পুরো ধর্মঘট।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন