শহরে যেতে ধরতে হয় ঘুরপথ

সম্প্রতি আনন্দবাজারের কিছু পাঠকের মুখোমুখি হয়েছিলেন দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান উজ্জ্বল মণ্ডল। এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় উঠল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সুব্রত সীট। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।সম্প্রতি আনন্দবাজারের কিছু পাঠকের মুখোমুখি হয়েছিলেন দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান উজ্জ্বল মণ্ডল। এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় উঠল আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সুব্রত সীট। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৬ ০০:২৩
Share:

এমনই হাল এলাকার নানা রাস্তার। —বিকাশ মশান

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাত্র এক জন চিকিৎসক। তিনিও সময়ের আগে চলে যান। তাছাড়া ইনডোর চিকিৎসা চালু হওয়া দরকার।

Advertisement

রঞ্জিতকুমার মণ্ডল ইছাপুর কর্মকারপাড়া

প্রধান: গড়ে দিনে সত্তরের বেশি রোগীর আউটডোর চিকিৎসা হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। চিকিৎসক সময়ের আগে চলে যান কি না নজরে রাখা হবে। নয়ের দশকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠে। ৪০ শয্যার ইনডোর হওয়ার কথা ছিল। হয়নি। বর্তমান বিধায়ক প্রচারে এলে দেখানো হয়েছিল। ফের বলা হবে।

Advertisement

আমাদের এলাকাররাস্তা একেবারে বেহাল। দুর্গাপুর যেতে আড়াই কিলোমিটার ঘুরতে হয়।

ঝর্না গড়াই হেতেডোবা

প্রধান: ওই রাস্তা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। মোরাম, বোল্ডার দিয়ে খানাখন্দ বোজানো হয়েছে। তবে বড় কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা আছে। এডিডিএ-কে বিষয়টি জানানো আছে।

এলাকার রাস্তা বেহাল। কত দিন সংস্কার হয়নি মনে পড়ে না। অথচ, প্রতি দিন শত-শত লোককে দুর্গাপুর শহরে যেতে হয়।

উজ্জ্বল চক্রবর্তী ইছাপুর হুচুকতলা

প্রধান: বছর তিনেক সংস্কার হয়নি। ২০১২ সালে এডিডিএ এক বার সংস্কার করেছিল। পুজোর আগে বড়-বড় খানাখন্দ পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ভরাট করা হয়েছে। এডিডিএ থেকে রাস্তার আমূল সংস্কার ও সম্প্রসারণের ইঙ্গিত মিলেছে। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে।

নির্মল ব্লক হওয়া সত্ত্বেও অনেকে এখনও মাঠেঘাটে শৌচকর্ম করতে যাচ্ছেন।

শুভদীপ সৌ মণ্ডল ইছাপুর হাটতলা

প্রধান: সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৭৮৫ পরিবারের শৌচাগার আছে। কিছু পরিবারের বাকি আছে জায়গার অভাবে। তেমন পরিবারের জন্য জব্বরপল্লি, বনশল, ইছাপুর, বাঙুরি, সরপিতে একটি করে কমিউনিটি শৌচাগার গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। মাঠে-ঘাটে যাওয়ার অভ্যাস ছাড়াতে বিডিও-র উদ্যোগে নিয়ম করে নজরজারি চলছে।

এলাকার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি হল খুব দরকার।

অক্ষয় কুণ্ডু বাঙুরি

প্রধান: সরপিতে প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বড় কমিউনিটি হল গড়ার কাজ চলছে। এ ছাড়া ভীমেশ্বরে একটি কমিউনিটি হল গড়ার প্রস্তাব জেলা পরিষদে জমা দেওয়া হয়েছে।

রাস্তায় আলো নেই। অন্ধকারে যাতায়াতে খুব সমস্যা হয়।

অমিত গড়াই ইছাপুর পঞ্চায়েত পাড়া

প্রধান: ২০০৮ সালে এক বার রাস্তার ধারে আলো লাগানো হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল কে দেবে তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়ায় উদ্যোগ আর এগোয়নি। এই অঞ্চল পুরসভা লাগোয়া। যদি কখনও অন্তর্ভুক্তি ঘটে তাহলে সমস্যা মিটবে।

এলাকায় একটি গার্লস স্কুল তৈরি করা খুব জরুরি।

কল্যাণ রায়চৌধুরী সরপি

প্রধান: ইছাপুর এনসি ইনস্টিটিউটে বাইশশোর বেশি পড়ুয়া। তার প্রায় অর্ধেক ছাত্রী। একটি গার্লস স্কুল হলে ওখানে পড়ুয়ার চাপ কমে। বিষয়টি মন্ত্রী মলয় ঘটককে জানিয়েছি। এ দিকে জমির দাম খুব বেশি। যদি জমি পাওয়া যায় তাহলে হয়তো স্কুল হয়ে যাবে।

এলাকাবাসীর বিনোদনের জন্য একটি পার্ক দরকার।

শেখ রাজু আরতি

প্রধান: সরপিতে বড় এলাকা জুড়ে পার্ক গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পার্ক গড়তে অনেক জায়গা লাগে। এখানে ‘রাধাবন’ নামে শালবন আছে। সেখানে পুকুর কেটে সৌন্দর্যায়ন করে, বৃক্ষরোপণ করে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ডিসেম্বরে কাজ শুরু হবে। এলাকায় পিকনিক স্পটের অভাবও দূর হবে।

খেলার মাঠ আছে। কিন্তু কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না।

প্রদীপ রায় জব্বরপল্লি

প্রধান: ভীমেশ্বরে একমাত্র খেলার মাঠটি রয়েছে। মাঠের ভিতর দিয়ে একটি রাস্তা ছিল। পঞ্চায়েতের উদ্যোগে সেটি সরিয়ে মাঠের পাশে করা হয়েছে। মাঠটিতে একটি মিনি স্টেডিয়াম গড়ার প্রস্তাব জেলা পরিষদে পাঠানো হয়েছে। যদি জেলা পরিষদ থেকে অর্থ না মেলে তাহলে অন্য কোনও দফতর থেকে অর্থ বরাদ্দ করানোয় উদ্যোগী হব।

এলাকায় কোনও পাঠাগার নেই। কোনও উদ্যোগ হচ্ছে কি?

ঝর্না গড়াই হেতেডোবা

প্রধান: পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু তা গড়ার জমির সমস্যা আছে। অঙ্গনওয়াড়ির জমি না পেয়ে ইছাপুর ধীবরপাড়ার অঙ্গনওয়াড়িটি স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে চালু করতে হয়েছে।

এলাকায় জলের পাইপলাইন আরও বাড়ানো দরকার। তাছাড়া বাড়ি-বাড়ি সংযোগ দরকার।

অক্ষয় কুণ্ডু বাঙুরি

প্রধান: সরপি মোড়, সরপি গ্রাম, হেতেডোবা, বাঁশগড়া প্রভৃতি জায়গায় আগে তীব্র জলকষ্ট ছিল। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে দৈনিক ৩২ হাজার লিটার জল সরবরাহ করতে হতো। এর ফলে পঞ্চায়েতের আর্থিক চাপ বাড়ছিল। তবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করায় সমস্যা অনেকটাই মিটে গিয়েছে। প্রায় আড়াইশো জলের কল চালু হয়েছে। পঞ্চায়েতের হাতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জলপ্রকল্পের দায়িত্বভার তুলে দিলে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া শুরু হবে।

বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা নতুন করে চালু হওয়া দরকার।

উজ্জ্বল চক্রবর্তী ইছাপুর হুচুকতলা

প্রধান: বিধবা ভাতার নতুন সংযোজন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে নতুনদের দেওয়ার উপায় নেই। তবে বার্ধক্য ভাতার ক্ষেত্রে বিপিএল তালিকাভুক্তদের ক্ষেত্রে ৬০ বছর পেরোলে নতুন সংযোজন করা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন