নিয়ম ভেঙে তৈরি বাঁধ, নালিশ টোল আদায়েরও

নিয়ম না মেনে অজয়ের উপরে তৈরি বাঁধ দিয়ে চলছে যাতায়াত। বর্ধমান, বীরভূম ও ঝাড়খণ্ডের মানুষজন তা ব্যবহার করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

বাগডিহা-সিদ্ধপুরে অজয়ে বাঁধ। নিজস্ব চিত্র।

নিয়ম না মেনে অজয়ের উপরে তৈরি বাঁধ দিয়ে চলছে যাতায়াত। বর্ধমান, বীরভূম ও ঝাড়খণ্ডের মানুষজন তা ব্যবহার করেন। কিন্তু যাতায়াত করতে গেলে ‘টোল’ নিচ্ছেন কয়েক জন, সম্প্রতি আসানসোলের মহকুমাশাসকের কাছে জামুড়িয়ার চিচুরিয়া পঞ্চায়েতের বাগডিহা-সিদ্ধপুর এবং চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের লোদায় অজয়ের উপরে দু’টি বাঁধ নিয়ে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন জামুড়িয়ার বিডিও।

Advertisement

অজয়ের দু’পাড়ে রয়েছে জামুড়িয়ার বাগডিহা ও সিদ্ধপুর গ্রাম এবং বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের পাটসুণ্ডির লবসন, জামালপুর। বাসিন্দারা জানান, ওই বাঁধ দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হলে মোটরবাইক, সাইকেল ও চার চাকার গাড়িকে যথাক্রমে আট, তিন ও ৩০ টাকা করে দিতে হয়। বাসিন্দাদের দাবি, ফি দিন গড়ে ৬০টি গাড়ি, শ’খানেক সাইকেল ও প্রায় দু’শো মোটরবাইক যাওয়া-আসা করে বাঁধ দিয়ে।

বাঁধটি ব্যবহার করেন দু’পাড়ের মানুষই। এই অস্থায়ী বাঁধ ব্যবহার করলে বাগডিহা থেকে সিউড়ির দূরত্ব মাত্র ৩৮ কিলোমিটার বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা ধীরাজ পাল। বীরভূমের অনেকে জামুড়িয়ায় এসে সব্জি বিক্রি করেন।

Advertisement

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাঁধটি অবৈধ ভাবে চালান বাগডিহা-সিদ্ধপুরের চিন্ময় মণ্ডল, অশোক পাল এবং বীরভূমের বিশ্বনাথ গড়াই, চন্দন গড়াই, উত্তম পাল প্রমুখেরা। যদিও চিন্ময়বাবুর দাবি, ‘‘বাঁধের আয়ে এলাকার উন্নয়ন হয়।’’ বিশ্বনাথবাবুরও দাবি, ‘‘বীরভূমের সাধারণ মানুষ এই বাঁধ দিয়েই বর্ধমানের বাজার ও হরিপুর, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জের হাসপাতালে যান। বাঁধটি নিয়ে প্রশাসন বাধা দেয়নি।’’

একই পরিস্থিতি চুরুলিয়ার লোদা ঘাটেও। ঘাটের ওপাড়ে ঝাড়খণ্ডের নলা, সুলতানপুর আড়া, খৈরি, আফজলপুর, কাস্তা, কউরাবাদ প্রভৃতি এলাকা রয়েছে। বাঁধ পেরোতে গেলে পাঁচ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই বাঁধটি কয়লা পাচারের জন্যও ব্যবহার করা হয়। তাঁরা জানান, কয়লা বোঝাই গরুর গাড়ি ও ভ্যানের জন্য ‘টোল’ যথাক্রমে ১০০ ও ১৫০ টাকা।

চুরুলিয়ার পঞ্চায়েত প্রধান পিন্টু মিশ্র জানান, বছর তিনেক আগে দরপত্র ডেকে অস্থায়ী সেতুর বরাত দেওয়া হয়। সেই বরাতের মেয়াদ শেষের পরে ফের চলতি বছরের ১৮ নভেম্বর নতুন করে দরপত্র ডাকা হলেও কেউ আসেননি বলে দাবি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি উদীপ সিংহের। পিন্টুবাবুর অভিযোগ, ‘‘মেয়াদ শেষ হলেও ঝাড়খণ্ডের কয়েক জন এ পারের কয়েক জনের মদতে বাঁধটি অবৈধ ভাবে চালাচ্ছেন ও টাকা তুলছেন।’’ সম্প্রতি জামুড়িয়ার বিডিও অনুপম চক্রবর্তী উদিপবাবুকে সঙ্গে নিয়ে লোদা ঘাট পরিদর্শনেও যান।

উদীপবাবুর দাবি, ‘‘ঝাড়খণ্ড ও বীরভূমের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তারাও কোনও অনুমতি দেয়নি।’’ আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘জামুড়িয়ার বিডিও লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন