এ ভাবেই গজিয়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান । নিজস্ব চিত্র
নিয়ম না মেনে গজিয়ে উঠেছে দোকানপাট। রয়েছে মোটরবাইকের অবৈধ পার্কিং। এমনই ছবি আসানসোল আদালত চত্বরের। আইনজীবীদের অভিযোগ, এর জেরে পথচারীরা যেমন সমস্যায় পড়ছেন, তেমনই আদালত চত্বরের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
জেলা ভাগের পরে এই চত্বরেই তৈরি হচ্ছে জেলা আদালত, বিচারক-আধিকারিকদের আবাসন। অথচ, এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার এক দিকে রয়েছে চা-বিস্কুট, লস্যি, কচুরির দোকান। অন্য দিকে, পরপর ভাত-রুটির হোটেল। তার সঙ্গে রাস্তার একাংশ দখল করে মাটিতে ফরাস বিছিয়ে বসে পড়েছে জামা-প্যান্ট, খাতা-কলমের দোকান। সঙ্গ দিচ্ছে মোটরবাইকের অবৈধ পার্কিং। তা ছাড়া আদালত চত্বর শুরুর মুখে ঘড়িমোড়। এখান থেকে শহরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, এসবি গড়াই রোড, বার্নপুর রোড ও গার্লস কলেজ রোড ধরা যায়। ফলে ফি দিন বহু যানবাহন আদালত ঘেঁষে চলাচল করে।
কিন্তু অবৈধ পার্কিং ও দোকানপাটের দৌরাত্ম্যে আদালতের মূল প্রবেশদ্বারই ঢেকে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এক প্রবীণ আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘অবৈধ দোকানপাট, পার্কিং ও হকারদের দাপট দেখলে মনে হয় আমরাই এখানে ব্রাত্য।’’ যদিও আইনজীবীদের একাংশ জানান, হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুসারে যে কোনও আদালত চত্বরের ৫০ গজের মধ্যে কোনও দোকানপাট বসার কথা নয়।
তা হলে কেন এমনটা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আইনজীবীর অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতাদের প্রচ্ছন্ন মদতেই এমনটা চলছে। এই পরিস্থিতি বাড়ছে যানজটও। সাধারণ গাড়ি তো বটেই, বিচারকের গাড়িও সেই জটে আটকে যাচ্ছে, এমন দৃশ্যও প্রায়ই দেখা যায় বলে জানান আইনজীবীরা।
আসানসোল বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বাণী মণ্ডলের অভিযোগ, একাধিক বার বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থার দাবিতে মহকুমা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। তার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। প্রশ্নের মুখে পড়ছে নিরাপত্তাও। বানিবাবু জানান, বছর তিনেক আগে আসানসোল সংশোধানাগার থেকে আবাসিক পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আদালত চত্বর এমন ঘিঞ্জি হলে ফের তেমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর। সরকারি আইনজীবী তাপস উকিলের আর্জি, ‘‘আমরা চাই, সৌন্দর্যায়নের কথা ভেবেও আদালত চত্বর সাফ করা হোক।’’
তবে বিষয়টি নিয়ে এই আদালতের আইনজীবী তথা আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘শহরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে এই বিষয়টিও রয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক (আসানসোল) প্রলয় রায়চৌধুরীও। তবে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা আদালত ভবন তৈরির পরে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।