চোখের ইশারা বলল, মদ আছে

চোখের ভাষাতেই ওয়েটার জানিয়ে দিল, চিন্তা নেই। মদ মজুত আছে। কিন্তু, শর্ত হোটেলের পিছন দিকে গিয়ে খেতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবার থেকেই জাতীয় এবং রাজ্য সড়কের ধারে পাঁচশো মিটারের মধ্যে মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৩৩
Share:

চোখের ভাষাতেই ওয়েটার জানিয়ে দিল, চিন্তা নেই। মদ মজুত আছে। কিন্তু, শর্ত হোটেলের পিছন দিকে গিয়ে খেতে হবে।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবার থেকেই জাতীয় এবং রাজ্য সড়কের ধারে পাঁচশো মিটারের মধ্যে মদ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। শনিবার রাতে দুর্গাপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের বেশ কিছু অংশ ঘুরে দেখা গিয়েছে, দোকানে ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে। তবে, রাস্তার ধারের দু’একটি হোটেল-ধাবায় নরম পানীয়ের বোতলে মদ মিশিয়ে বিক্রির ঘটনা নজরে এসেছে। যদিও রাত ১ টা পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কোনও বিশেষ নজরদারি দেখা যায়নি এই সব ধাবা বা হোটেলে।

দুর্গাপুর শহরের মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক। জাতীয় সড়কের ধারে পাকা মদের দোকান রয়েছে বেশ কয়েকটি। অভিযোগ, ধাবা বা এমনি হোটেলেও প্রকাশ্যে অনেককেই মদ খেতে দেখা যেত। গত এক সপ্তাহ ধরে ধাপে ধাপে মদের পাকা দোকানগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে দোকানের সাইনবোর্ডও খুলে দেওয়া হয়েছে। যেমন গাঁধী মোড়ে রাজ্য সরকারের একটি লজে দীর্ঘদিন ধরে একটি মদের দোকান চলছিল। ফরিদপুর ফাঁড়ির উল্টো দিকে হোটেল লাগোয়া বহু পুরনো একটি মদের দোকান ছিল। সব এখন বন্ধ।

Advertisement

তবে, ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড় হওয়ায় কিছু খাওয়ার হোটেল চুপিচুপি ইচ্ছুক খদ্দেরদের মদ দেওয়ার কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। শনিবার রাতেই ভিড়িঙ্গির দিকে এগোতে বাঁ দিকের সড়কের ধারের একটি হোটেলে দেখা গেল জনা চারেক খদ্দের। খদ্দের সেজে ভিতরে ঢুকে ইশারা করতেই ধরে ফেলল কিশোর ওয়েটার। মদ পাওয়া যাচ্ছে কিনা, সেটা জানতেই আসা শুনে অবশ্য হতাশ হল সে। চোখে পড়ল, রিসেপশনের টেবিলের নীচে কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল থেকে গ্লাসে পেগ ঢেলে এগিয়ে দিল খদ্দেরদের দিকে। খদ্দেররা আশপাশ দেখে নিয়ে হোটেলের পিছনের দিকে চলে গেলেন। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে। আরও বা়ড়াতে বলা হবে।’’

স্থায়ী দোকান বন্ধ। অথচ এ ভাবে লুকিয়ে চুরিয়ে মদ বিক্রি হওয়া প্রসঙ্গে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেন লিকার, কান্ট্রি স্পিরিট অফ অ্যান্ড অন অ্যান্ড হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক গৌতম মুখোপাধ্যায় জানান, এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। বহু লোকের রুজিও গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বেআইনি মদ বিক্রির সুযোগ এর ফলে বেড়ে যাচ্ছে। রাজ্য সরকার এগিয়ে আসায় দেশের আটটি রাজ্য ছাড় পেয়ে গিয়েছে। আমরা দ্রুত নবান্নে গিয়ে আমাদের রাজ্য সরকারকেও রিভিউ ফাইল পেশ করার অনুরোধ জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন