দুর্গাপুর স্টেশন। নিজস্ব চিত্র
দেশের প্রায় দু’শো স্টেশনে বিমানবন্দরের মতো ‘ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম’ (আইএসএস) ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। এর মধ্যে রয়েছে আসানসোল ও দুর্গাপুর স্টেশনও। চলতি বছরেই দুই স্টেশনে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান রেল কর্তৃপক্ষ।
রেল সূত্রে জানা যায়, নতুন এই নিরাপত্তা ব্যবস্থায় স্টেশনে গেট দিয়ে ঢোকার সময়ে বিমানবন্দরের মতো যাত্রীদের ‘সিকিউরিটি চেক’ করা হবে। সঙ্গের মালপত্র প্রয়োজন অনুযায়ী স্ক্যানারের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে। তা ছাড়া রেলপুলিশও এ সব পরীক্ষা করে দেখবে। পরীক্ষার জন্য সময় লাগবে। তাই যাত্রীদের ট্রেন ধরার জন্য বেশ কয়েক মিনিট আগে স্টেশনে আসার পরামর্শ দেওয়া হবে। এর ফলে নিরাপত্তা জোরদার হবে। শেষ মুহূর্তে বহু যাত্রী এক সঙ্গে ট্রেন ধরতে গেলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সেই আশঙ্কা এড়ানো যাবে বলেই মনে করছেন রেলকর্তারা।
পূর্ব রেলের সাতটি স্টেশনে ‘ইন্টিগ্রেটেড সিকিওরিটি সিস্টেম’ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আসানসোল ডিভিশনের আসানসোল ও দুর্গাপুর স্টেশন রয়েছে। তালিকায় হাওড়া ডিভিশনের বর্ধমান স্টেশনও রয়েছে। নতুন এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালুর জন্য স্টেশনের সব জায়গায় কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। দেখতে হবে স্টেশনে ঢোকার কী কী উপায় বা পথ রয়েছে। এর পরে সেই পথ ও উপায়গুলি বন্ধের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা-ও ঠিক করা হবে। এর জন্য কোথাও ‘প্রবেশপথ’ বন্ধ করা হবে, কোথাও বা পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে সংশ্লিষ্ট জায়গা। প্রয়োজন মতো নতুন গেট বসানো হবে। কোথাও আবার হয়তো রেলপুলিশের পাহারা বসাতে হবে।
এই স্টেশনগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বৈদ্যুতিন উপকরণ লাগানো হবে। স্টেশনের সর্বত্র পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে বলে জানান রেলকর্তারা। আসানসোল ও দুর্গাপুর স্টেশনে ইতিমধ্যেই একশোটি করে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এ ছাড়া স্ক্যানার, ‘ডোর ফ্রেম ডিটেক্টর সিস্টেম’, ‘ফেস রেকগনিশন’-এর জন্য বিশেষ ক্যামেরা প্রভৃতিও বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এ সব সামগ্রী কিনতে ইতিমধ্যেই দরপত্র ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। কুম্ভ মেলা উপলক্ষে নিরাপত্তার কড়াকড়ির জন্য ইতিমধ্যেই প্রয়াগরাজে (ইলাহাবাদ) নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আসানসোল ও দুর্গাপুরে চলতি বছরের মার্চের মধ্যে এই ব্যবস্থা কার্যকরী হবে বলে জানান রেলকর্তারা।
আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফের সিনিয়র সিকিউরিটি কমান্ড্যান্ট অচ্যুতানন্দ ঝায়ের বক্তব্য, ‘‘বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্ম রুখতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যা যা পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেই মতো কাজ হচ্ছে।’’