Burdwan University

১০ বছর অন্তর্বর্তী অডিট বন্ধ, তদন্ত

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী অডিট হয়নি। যদিও রাজ্য ও কেন্দ্রের অডিট নিয়মিত হয়েছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৪
Share:

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত। —ফাইল চিত্র।

হিসাব পরীক্ষক (অডিটর) রয়েছেন। তাঁর নিজস্ব দফতর, কর্মীরা রয়েছেন। তার পরেও গত ১০ বছর ধরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী অডিট হয়নি। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বর্ধমান শহরের জেলখানা মোড়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ‘উধাও’ হয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসতেই কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে অডিটের বিষয়টি। তাঁদের ধারণা, নির্দিষ্ট সময়ে অডিট হলে স্থায়ী আমানত ভেঙে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা বছর খানেক আগেই জানা যেত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান থানায় অর্থ বিভাগের কর্মী ভক্ত মণ্ডলের সাহায্যে ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে টাকা অন্য জনের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে বলে রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী অভিযোগ করেছেন। আগেও অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে টাকা তোলার চেষ্টায় অভিযুক্ত ভক্ত। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য গৌতম চন্দ্র বলেন, “অডিট হলে আগেই বিষয়টি ধরা পড়ত। আমরা বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে আর্থিক বিষয়ের তদন্ত করার কথা ভাবছি।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ক্ষুব্ধ উপাচার্য অডিট বিভাগের কর্মীদের বদল করে দিয়েছেন। দ্রুত অন্তর্বর্তী অডিট শেষ করারও নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী অডিট হয়নি। যদিও রাজ্য ও কেন্দ্রের অডিট নিয়মিত হয়েছে। অডিট না করার কারণ জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরীক্ষকের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ দিন বিকেলে রেজিস্ট্রার দফতরের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরীক্ষক ইন্দ্রনারায়ণ ঘোষ জানান, ২০২২ সাল পর্যন্ত এজি বেঙ্গলের অডিট হয়েছে। তার পরেই বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলা নিষেধ। কিছুই বলব না।”

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় ফের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ দিন রেজিস্ট্রারের ঘরে বৈঠকও হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগে জানানো হয়েছে, ভক্ত গত ৭ ফেব্রুয়ারি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। তবে এরআগে, ২০২২ সালের ১২ অগস্ট, ২৬ অগস্ট ও ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ বর্ধমানের জেলখানা মোড়ের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির শাখা থেকে এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা পাঠিয়েছেন তিনি।

এফআইআরে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, জাল সই ও জাল নথির ভরসায় ব্যাঙ্ক কী ভাবে অন্যের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাল? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সদুত্তর দেননি বলেও জানানো হয়েছে। তবে হোয়াটস অ্যাপ মেসেজের সূত্রে বোঝা যাচ্ছে, ভক্তের সাহায্যেই ব্যাঙ্ক ওই টাকা জনৈক সুব্রত দাসের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, একটি চক্র গড়ে উঠেছে।

অভিযুক্ত ভক্তর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সুব্রত দাস বলেন, ‘‘পরে কথা বলব।’’ রেজিস্ট্রারের দাবি, “ভক্তের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। শো-কজ়ের জবাব দেননি তিনি। তাঁর আবাসনে চিঠি ঝুলিয়ে
দিয়ে এসেছি আমরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন