বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি বলে উচ্চ শিক্ষা দফতরের তদন্ত কমিটি জানিয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁয়ের বিরুদ্ধে পদের ‘অপব্যবহার’ করার অভিযোগ উঠল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র বলে পরিচয় দিয়ে কয়েকজন সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল তথা আচার্যকে চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী, উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে।
চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, “আমার কাছে অভিযোগের চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ওই চিঠির প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল উচ্চশিক্ষা দফতরকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। আগে ওই পাঁচটি পদের নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উচ্চশিক্ষা দফতরকেই নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। উপাচার্য নিমাই সাহাও ওই চিঠির ব্যাপার এড়িয়ে যান। সহ উপাচার্য বলেন, “বালখিল্যের মতো অভিযোগ। একটা ক্ষেত্রেও আমার কোনও ভূমিকা নেই। অন্য আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে। তাই উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাকেও জড়ানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।”
চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, সহ উপাচার্য পদে বসার আগে ষোড়শীমোহনবাবু বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদই সামলেছেন। ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সহকারী রেজিস্ট্রার, শিক্ষক নিয়োগ থেকে পদোন্নতির ব্যাপারেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও নিয়মই মানা হয়নি। অঙ্কের এক অধ্যাপককে নিয়োগের সময় কোনও ইন্টারভিউ নেওয়া হয়নি। তেমনই স্নাতকোত্তরস্তরে ৫৫ শতাংশ নম্বর না থাকার পরেও শিক্ষক নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে। ২০১১ সালে ছ’মাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হন তিনি। অভিযোগ, তখন নিজের পরিজনদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ করেছিলেন।
তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারি, উপাচার্য থাকার সময় দরপত্র না ডেকে ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারকে ২ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দেওয়া-সহ পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ১৯৯৬ সালে পরীক্ষা নিয়ামক থাকার সময় কোনও রকম ছুটি না নিয়ে ৭০০ কিলোমিটার দূরে গবেষণাগারে বসে কী করে পিএইচডি করলেন ষোড়শীমোহনবাবু?
জবাবে সহ উপাচার্য বলেন, “ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনে এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের লিখিত অনুমতি নিয়ে এখানকার গবেষণাগার ব্যবহার করেছিলাম।”