পরাশিয়া কমিউনিটি হল। —নিজস্ব চিত্র।
শৌচাগারের দরজা ভাঙা। রাতবিরেতে বারান্দায় বসে মদের আসর। সকালে স্কুলের কর্মীরা সাফ করেন মদের খালি বোতল। এমনই হাল জামুড়িয়ার পরাশিয়া পঞ্চায়েতের পরাশিয়া কমিউনিটি হলটির। পরিকাঠামোগত ভাবে বেহাল এই হলেই ক্লাস হয় পরাশিয়া হিন্দি প্রাথমিক স্কুলের। ফলে সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি সমস্যায় পড়ছে পড়ুয়ারাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৮-র ২৬ মার্চ তৎকালীন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতি নির্মিত এই হলটির উদ্বোধন করেন। তার পরে ২০১৮ সালের মার্চে এই হলে শুরু হয়েছে পরাশিয়া হিন্দি প্রাথমিক স্কুল। তা ছাড়া বিয়ে-সহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে এই হল মেলে নিখরচায়।
কিন্তু পরিকাঠামোগত নানা সমস্যার জেরে বিপত্তি বেড়েছে। কেমন তা? এলাকাবাসী জানান, নিখরচায় হল মেলে ঠিকই। কিন্তু জলের সুবন্দোবস্ত নেই। ভাড়া করতে হয় জেনারেটর। তা ছাড়া শৌচাগারের দরজাটিও ভাঙা। এমনকি, দরকারে এলাকাবাসীকেই হল-চত্বর সাফাই করতে হয়। সব থেকে সমস্যায় পড়েছেন স্কুলের কর্মীরা। তাঁরা জানান, প্রায়শই রাতে ঘেরা পাঁচিল টপকে হলের বারান্দায় বহিরাগত কয়েক জন মদ-জুয়ার আসর বসাচ্ছে। ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতিও প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
স্কুলের মিড-ডে-মিলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা জানান, শৌচাগারের সামনেই রান্নার জায়গা। শৌচাগার সাফ না হওয়ায় বর্ষায় বাড়ে মশার উপদ্রব। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার-ইনচার্জ) জনার্দন পাণ্ডের কথায়, ‘‘শৌচকর্মের জন্য অনেক সময়েই পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের অভিভাবকদের ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের ফোনে না পাওয়া গেলে স্কুলেরই কর্মীরা তাঁদের বাড়ি নিয়ে যান পড়ুয়াদের।’’ এ ছাড়া এই হলে এগারোটি বৈদ্যুতিন পাখা থাকলেও চলে মাত্র চারটি।
কিন্তু কেন এমন হাল? জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উদীপ সিংহের বক্তব্য, ‘‘হলটিতে ইসিএলের বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন অনুষ্ঠান যাঁরা আয়োজন করেছেন, তাঁরা শৌচাগার ঠিক ভাবে ব্যবহার করেননি। ফলে ভেঙে গিয়েছে দরজা। দিন পনেরো আগেই আগাছা সাফ করা হয়েছে। বর্ষায় ফের আগাছা হয়েছে। তা সাফ করা হবে।’’ সমিতির সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জল সরবরাহ করে না। এত সমস্যা মূলত জলের অভাবেই। তবে আমরা কমিউনিটি হলের আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা নিয়েছি।”