Kaksa

এক জন শিক্ষকের ভরসায় চলছে কাঁকসার স্কুল

বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি শিক্ষা দফতরে জানানো হবে।’’ স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার কারণে এই স্কুলে শিক্ষক দেওয়া যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ০০:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলের প্রশাসনিক কাজকর্ম থেকে মি-ডে মিলের কাজ দেখাশোনা। পড়ানো থেকে টিফিন ও ছুটির ঘণ্টা বাজানো— সব কাজ সামলাতে হচ্ছে মাত্র একজন শিক্ষককেই। একা হাতে এত কিছু করতে গিয়েই মূল কাজ পঠনপাঠন শিকেই উঠেছে। এই করুণ অবস্থা কাঁকসার গাংবিল হিন্দি জুনিয়র হাইস্কুলের। স্কুলে শিক্ষক না থাকায় অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েদের অন্যত্র নিয়ে চলে যাচ্ছেন। তাই স্কুল বাঁচাতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বুধবার বিডিও (কাঁকসা) ও স্কুল শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

বিডিও সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি শিক্ষা দফতরে জানানো হবে।’’ স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার কারণে এই স্কুলে শিক্ষক দেওয়া যায়নি।

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের গাংবিল, লালবাবাডাঙা, পলাশডাঙা, সোকনার মতো গ্রামগুলিতে হিন্দিভাষী মানুষের বসবাস অনেকটাই বেশি। মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা এগুলি। এই সব এলাকার হিন্দিভাষী পড়ুয়াদের আগে পানাগড় হিন্দি হাইস্কুল বা অন্য কোনও বাংলামাধ্যম স্কুলে যেতে হত। দূরত্বের কারণে মাঝপথে অনেকেই পড়াশোনার ইতি টেনে দিত দাবি বাসিন্দাদের। সেই সমস্যা মেটাতে ২০১০ সালে গাংবিল এলাকায় একটি জুনিয়র হিন্দি হাইস্কুল তৈরি করা হয়। সেই সময় দু’জন অতিথি শিক্ষক দিয়ে স্কুলে পঠনপাঠন চালু করা হয়। ২০১৩ সালে এক জন স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হওয়ায় অতিথি শিক্ষকদের এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ২০১৪ সালে এখানে আসেন আর এক শিক্ষক প্রদীপ গুপ্ত। প্রদীপবাবু-সহ দু’জন স্থায়ী শিক্ষককে দিয়েই স্কুল মোটের উপর ভালই চলছিল। তবে ছন্দপতন ঘটে ২০১৭ সালে। এই বছর স্কুল ছেড়ে দেন ২০১৩ সালে যোগ দেওয়া শিক্ষক। তার পর থেকেই প্রদীপবাবুর ভরসায় চলছে স্কুলটি।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে প্রধান শিক্ষক-সহ চার জন শিক্ষক থাকার কথা। স্কুল চালু হওয়ার সময় থেকেই প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা পড়েই রয়েছে। বর্তমানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১২০। অথচ দীর্ঘদিন ধরে তিন জন শিক্ষকের পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। নেই কোনও গ্রুপ ডি কর্মীও। ফলে, স্কুলের একমাত্র শিক্ষক প্রদীপবাবুকে চারটি শ্রেণির ক্লাস নেওয়া থেকে শুরু করে স্কুলের যাবতীয় কাজ করতে হচ্ছে।

এই অবস্থায় পঠনপাঠন যে নষ্ট হতে বসেছে সে কথা অভিভাবকেরাও জানিয়েছেন। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘একা হাতে সব দিক সামাল দিতে গিয়ে আসল কাজটাই হচ্ছে না। কোনওক্রমে চলছে পঠনপাঠন। আর কিছুদিন এই পরিস্থিতি থাকলে শুধু শিক্ষক থাকবেন। কোনও পড়ুয়ার দেখা মিলবে না।’’

শিক্ষক প্রদীপবাবু জানান, তিনিই আপাতত সব শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন। পাশাপাশি মিড-ডে মিল-সহ অন্য কাজও দেখাশোনা করতে হচ্ছে তাঁকেই। তিনি বলেন, ‘‘আমি দীর্ঘদিন ধরে দফতরের বিভিন্ন জায়গায় এখানকার সমস্যার কথা জানিয়েছি। এখনও কোনও সুরাহা হয়নি।’’ বিজেপি নেতা রমন শর্মা জানান, স্কুলের উন্নতির জন্য বিডিও ও স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। স্কুল শিক্ষা দফতরের সার্কেল ইনস্পেক্টর (কাঁকসা) সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘আপার প্রাইমারির জন্য নতুন নিয়োগ না হওয়ায় এই স্কুলে শিক্ষক দেওয়া যায়নি। নিয়োগ হলেই সমস্যা মিটবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement