Pottery

Kali Puja 2021: প্রদীপের চাহিদা বেড়েছে, আশা কুমোরপাড়ায়

কালনা মহকুমা এলাকার মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, মোমবাতি, চায়না আলোর ব্যবহার বাড়লেও উৎসবে বহু পরিবারই ভরসা রাখে মাটির চোদ্দো প্রদীপে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৯:১৩
Share:

এক মনে প্রদীপ তৈরি, কালনায়। নিজস্ব চিত্র।

কালীপুজোয় ঘর আলো করত মাটির প্রদীপ। মানুষের রুচির বদলের সঙ্গে প্রদীপের আকার বদলেছে। পোড়ামাটির প্রদীপ রঙে রঙিন হয়ে উঠেছ। তবুও চিনে আলোর দাপটে ক্রমশ যেন কোণঠাসা বাংলার মাটির প্রদীপ। তবুও প্রতিবারের মতো এ বারও দীপাবলির আগে মৃৎশিল্পীরা তৈরি শুরু করেছেন নানা ধরনের ছোট-বড় প্রদীপ। কেউ কেউ পসরা সাজিয়ে বাজারে বসেছেন। শিল্পীদের দাবি, গতবার করোনার ধাক্কায় প্রদীপ বিক্রি নেমে এসেছিল তলানিতে। এ বার দীপাবলির আগে সংক্রমণ গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমায় মাটির প্রদীপের বাজার বাড়তে শুরু করেছে।

Advertisement

কালনা মহকুমা এলাকার মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, মোমবাতি, চায়না আলোর ব্যবহার বাড়লেও উৎসবে বহু পরিবারই ভরসা রাখে মাটির চোদ্দো প্রদীপে। কালীপুজোর বাজার ধরতে তাই মাস ছয়েক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হয়। শিল্পীরা জানিয়েছেন, গতবার বিক্রি না হওয়ায় অনেকের তৈরি প্রদীপ বাড়িতেই পরে ছিল। এ বার তাঁরা ভাল বাজার পাওয়ার আশা করছেন।

পূর্বস্থলীর মৃৎশিল্পী মনোজ পাল বলেন, ‘‘এখনও বহু পরিবার কালীপুজোর রাতে মাটির প্রদীপই জ্বালান। তবে এ বার প্রদীপ তৈরির পরে শুকানোর কাজ করতে গিয়ে বার বার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃষ্টি। পাশাপাশি, মাটি এবং জ্বালানি কাঠের দাম বাড়ায় প্রদীপ তৈরির খরচও বেড়েছে। সে তুলনায় প্রদীপের দাম বাড়ানো যায়নি। তবে ভাল বিক্রি হওয়ায় ক্ষতি বিশেষ হচ্ছে না।’’

Advertisement

কালনার পূর্ব সাতগাছিয়ার মেদগাছি এলাকার শিল্পীদের তৈরি মাটির প্রদীপ কিনে নিয়ে যান হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়া, জিরাট, খামারগাছি, পান্ডুয়া, সমুদ্রগড়, শান্তিপুর, মেমারি-সহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা।

এখানকার শিল্পীরা জানিয়েছেন ট্রাক্টর প্রতি মাটি ১,২০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২,০০০ টাকা। দাম বেড়েছে কাঠেরও। তা সত্ত্বেও এ বার প্রতি একশো মাটির প্রদীপের পাইকারি দর রয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যেই। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রদীপে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন রং এবং নকশা। এই এলাকার শিল্পী চণ্ডী পাল বলেন, ‘‘উৎসবের জন্য বেশ কয়েকমাস ধরে প্রস্তুতি নিতে হয়। নিজে যেমন প্রদীপ তৈরি করি, তেমনই এলাকার অনেক শিল্পীদেরও প্রদীপের মডেল দিয়ে তাঁদের মাধ্যমেও কিছু তৈরি করা হয়। সব মিলিয়ে এ বার প্রায় এক লক্ষ প্রদীপ বিক্রি করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। শেষ দিকে বাজারে যে ভাবে চাহিদা বাড়ছে, তাতে এ বার কোনও প্রদীপ ঘরে জমে থাকবে না বলেই মনে হচ্ছে।’’ বাড়িতে ছেলের সঙ্গে কাঁপা কাঁপা হাতে প্রদীপ তৈরি করেন চণ্ডীর মা ভগবতী মণ্ডলও। তাঁর কথায়, ‘‘গতবার করোনা পরিস্থিতির জেরে বাজার বেশ মন্দা ছিল। আশা করছি এ বার ছেলেদের মুখে
হাসি ফুটবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন