রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের মণ্ডপ।
গ্রামে দুর্গাপুজো হয় না এমন নয়। কিন্তু কালীপুজোর উন্মাদনা তার কাছে কিছুই নয়। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের প্রতাপুর পঞ্চায়েতের জামগড়া গ্রাম বছর বছর ধরে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে মেতে ওঠে শ্যামামায়ের আরাধনায়। আশপাশের গ্রাম থেকেও ঠাকুর দেখতে ভিড় জমে এই গ্রামে।
গ্রামে হাজার তিনেক মানুষের বাস। দুর্গাপুজো হয় মোট ৬টি। সবগুলিই পারিবারিক। তার মধ্যে তিনটিতে মূর্তি পুজো। বাকি তিনটি ঘটে পুজো হয়। তেমন জাঁকজমক থাকে না। কিন্তু কালীপুজোয় অন্য ছবি। গ্রামের প্রধান উৎসব কালীপুজো। মোট ১৬টি কালীপুজো হয় গ্রামে। তার মধ্যে ১১টি সর্বজনীন। বাকি ৫টি পারিবারিক। বুধবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, সারা গ্রামে পুজোর আমেজ। কর্মসূত্রে বাইরে থাকা গ্রামবাসীরা ফিরে এসেছেন। গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গত কয়েকদিন ধরে বসেছে ভিয়েনের আসর। নারকেল নাড়ু, সিঁড়ির (বেসন ও গুড় দিয়ে তৈরি হয়) নাড়ু-সহ নানা ধরনের মিষ্টি তৈরি হয়েছে।
বাগদি পরিবারে ক্ষ্যাপা মায়ের পুজো প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। গ্রামের সব থেকে বড় পুজো। কালীপুজোর দ্বিতীয় দিনে সারা গ্রামের নিমন্ত্রণ থাকে পঙ্ক্তিভোজনে। এ ছাড়াও ঘটকবাড়ির কুড়ুনি, মায়ের পুজো, চট্টোপাধ্যায় বাড়ির শ্মশানি মায়ের পুজো উল্লেখযোগ্য। ঘটকবাড়িতে পুজোর সময় প্রায় ২০০ জন আত্মীয়-পরিজন উপস্থিত থাকেন। রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের পুজো সর্বজনীন পুজোগুলির মধ্যে সব থেকে বড়। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুজোর দিনগুলিতে প্রতি সন্ধ্যায় থাকবে অনুষ্ঠান। বাউল গান, একাঙ্ক নাটক, বিচিত্রানুষ্ঠান, অঙ্কন প্রতিযোগিতা থাকছে। গ্রামে প্রতিমা বিসর্জন হয় ভাইফোঁটার পরে।
সর্বজনীন পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সদস্য বাপি ঘোষ জানালেন, আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও ঠাকুর দেখতে আসেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গ্রামের অনেকেই যোগ দেন। সব মিলিয়ে কালীপুজোকে কেন্দ্র করে গ্রাম মিলনমেলায় পরিণত হয়। ছবি: বিকাশ মশান