বুড়ো মায়ের পুজোয় কনকাঞ্জলি

গ্রামের মাঝে ব্লক অফিসের গা ঘেঁষেই দেবীর পাকা মন্দির। উৎসব উপলক্ষে তার পাশে তৈরি হয়েছে বড় মণ্ডপ। উৎসবের দিনগুলিতে পুজো দেখার পাশাপাশি চলবে নানা অনুষ্ঠান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বহু বছর আগে জঙ্গলে ঘেরা এলাকায় তালপাতার মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু করেন তন্ত্রসাধক দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:১৭
Share:

সিঙেরকোন গ্রামের প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

আগে ছিল পারিবারিক পুজো। এখন তা সর্বজনীন। কিন্তু রীতি-রেওয়াজে কোনও পরিবর্তন হয়নি। কালনা ২ ব্লকের সিঙেরকোনের বুড়ো মায়ের পুজোয় এখনও দশমীতে ভোগে দেওয়া হয় ভিজে ভাত, পাতিলেবু, শোল মাছ পোড়া, কচুর শাক এবং লাল ডাঁটার টক।

Advertisement

গ্রামের মাঝে ব্লক অফিসের গা ঘেঁষেই দেবীর পাকা মন্দির। উৎসব উপলক্ষে তার পাশে তৈরি হয়েছে বড় মণ্ডপ। উৎসবের দিনগুলিতে পুজো দেখার পাশাপাশি চলবে নানা অনুষ্ঠান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বহু বছর আগে জঙ্গলে ঘেরা এলাকায় তালপাতার মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু করেন তন্ত্রসাধক দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কয়েক পুরুষ ধরে পুজো চালালেও বছর চল্লিশ আগে পরিবারের সদস্যেরা আর্থিক কারণে হাল ছেড়ে দেন। তার পরেই পুজোর ভার নেন গ্রামের বাসিন্দারা।

বুড়ো মা দেবীর দশ হাতে থাকে দশটি লাল পলা। সাধক দুর্গাদাস তালপাতায় দেবীর পুজোর মন্ত্র লিখে গিয়েছিলেন। সে মন্ত্রেই এখনও পুজো হয়। পুজোর আগে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্যের বাড়ি থেকে আনা হয় নারায়ণ শিলা। ষষ্ঠীর দিন ঘট এনে ভোগ, আরতি, চণ্ডীপাঠ করে শুরু হয় পুজো।

Advertisement

দেবীর মন্দিরের গায়েই রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী মন্দির। নবমীতে পুরোহিতকে সেখানেও আলাদা করে পুজো সারতে হয়। পুজোর দিনগুলিতে প্রতিদিনই দেবীর ভোগে মাছ থাকে। পুরোহিত দিবাকর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্দিরের পাশেই ভোগ রান্না হয়। এক বিধবা মহিলাকে ভোগ রাঁধতে হয়।’’

সিঙেরকোন গ্রামের এই পুজোয় রয়েছে কনকাঞ্জলি প্রথাও। বিসর্জনের আগে গ্রামের এক ব্রাহ্মণের হাতে তুলে দেওয়া পূর্ণপাত্র চাল এবং একটি কয়েন। গ্রামের বাসিন্দা পবিত্র রানা, শ্যামাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়েরা জানান, ‘‘উৎসবের দিনগুলিতে গ্রামের সমস্ত মানুষ মণ্ডপে আসেন। বাউলগান, নৃত্য-সহ নানা অনুষ্ঠান হয়। অন্নক্ষেত্রেরও আয়োজন করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন