কন্যাশ্রীর টাকা কাটার নালিশ

মঙ্গলকোটের গণপুর উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২২৯ জন ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগেরই গুসকরার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৯
Share:

অ্যাকাউন্টের টাকা কাটা হয়েছে, জানাচ্ছে ছাত্রীরা। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

সরকারি প্রকল্পের টাকা পাওয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। কিন্তু ন্যূনতম টাকা না রাখার কারণ দেখিয়ে আমানত কেটে নেওয়া হচ্ছে— অভিযোগ মঙ্গলকোটের বেশ কিছু ছাত্রীর। বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে তারা। ব্লক প্রশাসনের আশ্বাস, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে টাকা ফেরানোর জন্য আর্জি জানানো হবে।

Advertisement

মঙ্গলকোটের গণপুর উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২২৯ জন ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগেরই গুসকরার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী পিউ পাল জানায়, সপ্তাহখানেক আগে পাসবই আপডেট করতে গিয়ে সে দেখে, অ্যাকাউন্ট থেকে কখনও ৫৭ টাকা, কখনও আবার ২৯ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়েছে। এর কারণ জানতে চাইলে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, ন্যূনতম ব্যালেন্স না থাকার জন্যই এই টাকা কাটা হয়েছে। তাকে এর পর থেকে অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ২০০০ টাকা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে ছাত্রীটির দাবি।

ওই স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী লক্ষ্মী মার্ডি, অনামিকা সূত্রধরেরাও জানান, তাদের অ্যাকাউন্ট থেকেও টাকা কাটা হয়েছে। এই ঘটনায় স্কুলের অন্য ছাত্রীরাও চিন্তায় পড়েছে। পিউয়ের বাবা, পেশায় খেতমজুর শ্যামল পাল বলেন, ‘‘মেয়ে পড়াশোনার জন্য বছরে ৭৫০ টাকা করে পায়। তাতে পড়াশোনায় অনেকটা সাহায্য হয়। কিন্তু ব্যাঙ্কের নিয়মে ২০০০ টাকা অ্যাকাউন্টে রাখতে গেলে বাড়ি থেকে আরও ১২৫০ টাকা দিতে হবে। তা আমাদের পক্ষে অসুবিধের।’’ বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

স্কুলে কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক সুদীপ সামন্ত বলেন, ‘‘কন্যাশ্রীর অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ব্যাঙ্কে স্কুল থেকে ছাত্রীদের শংসাপত্র দেওয়া হয়। তার পরেও কী করে অ্যাকাউন্ট থেকে সাধারণ অ্যাকাউন্টের মতো টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে বুঝতে পারছি না!’’ বিডিও (মঙ্গলকোট) মুস্তাক আহমেদ বলেন, ‘‘কেটে নেওয়া টাকা যাতে ফেরত পায় ছাত্রীরা, সে জন্য ব্যাঙ্কের কাছে অনুরোধ জানাব।’’ কন্যাশ্রী প্রকল্পের জেলা আধিকারিক শারদ্যুতি চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে বারবার ওই ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। রাজ্য স্তরেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তার পরেও কী কারণে টাকা কাটছে বুঝতে পারছি না!’’ বিষয়টি নিয়ে ব্যাঙ্কের সাথে কথা বলার আশ্বাস দেন তিনি।

ব্যাঙ্কের ওই শাখার ম্যানেজার সুশান্ত দত্ত বলেন, ‘‘পুরনো অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হচ্ছে। যে সব অ্যাকাউন্ট ‘নর্ম্যাল’ করা আছে তাদের পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। তা করা গেলে এই সমস্যা হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন