ধসের পর শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।প্রতীকী ছবি।
ধসের জেরে বিপত্তি ঘটেছে মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই। কোনও রকমে বেঁচে ফিরেছেন ডাম্পার-চালক। বৃহস্পতিবার ইসিএলের কেন্দা এরিয়ার শঙ্করপুর–ছোড়া খোলামুখ খনির ওই ঘটনার পরে ফের শুক্রবারও ধস নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।
খনিকর্মীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে যেখানে ধসের জেরে ডাম্পারের একাংশ মাটিতে ঢুকে গিয়েছিল, তার অদূরেই শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ ফের মাটি ধসে গর্ত তৈরি হয়েছে। সেই সময়ে কেউ সেখানে না থাকায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
খনিকর্মী পিন্টু নুনিয়া, গান্ধারী তাঁতিরা জানান, খনিতে যাতায়াতের পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়নি। এর জেরে হাঁটাচলা থেকে কয়লাবোঝাই যানবাহনের যাতায়াতও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। এমনকি, এক বছরে তিনটি ডাম্পার এ ভাবে ধসের জেরে মাটিতে ঢুকে গিয়েছে বলে তাঁরা জানান। প্রতিবারই কোনও রকমে বেঁচে যান চালকেরা। তা ছাড়া রাস্তা কাঁচা হওয়ায় ডাম্পার বা অন্য যন্ত্র চালাতে গিয়ে তা-ও টাল খেয়ে যায়। যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় বিপত্তি ঘটতে পারে। সুরেন্দ্র মণ্ডল, রামসাগর সাউ নামে কয়েক জন জানান, এই খনির একাংশে মাটির নীচে আগুন জ্বলছে। প্রায়ই ধোঁয়া বার হয়। ফলে কাজ করার সময়ে অনেক শ্রমিকেরই শ্বাসকষ্ট হয়। রামসাগরবাবুর ক্ষোভ, ‘‘কয়লার গুঁড়ো ও মাটি উড়লেও নিয়মিত জল পর্যন্ত ছেটানো হয় না।’’
কেকেএসসি-র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, ইউসিএমইউ-র কেন্দা এরিয়া সম্পাদক গোপীনাথ নাগদের অভিযোগ, যে কোনও মূল্যে মুনাফা করাটাই লক্ষ্য হয়ে গিয়েছে ইসিএলের। তাই উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে শ্রমিক-সুরক্ষার বিষয়টি অবহেলিত থাকছে। আরও অভিযোগ, বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে অনেক ক্ষেত্রেই খনি বন্ধের চক্রান্তও চলছে। এমনকি, এই ঘটনার আগে কাজোড়া এরিয়ার জামবাদ খোলামুখ খনিতে একটি শোভেল মেশিল-সহ চালক ধসের জেরে মাটি চাপা পড়ে মারা যান বলে শ্রমিক নেতৃত্ব জানান। তার পরেও পরপর এমন ঘটনা ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তায় ইসিএল উদাসীন বলে অভিযোগ তাঁদের।
যদিও ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় অবশ্য বলেন, ‘‘শ্রমিক-নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাটা সবসময়েই আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকে। সে বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপও করা হয়।’’