চিকিৎসক সঙ্কটে কালনা জেরবার

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত দু’বছরে সিক নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ), হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) মতো নতুন বিভাগ চালু হয়েছে। কিন্তু বাড়েনি ডাক্তারের সংখ্যা। উল্টে চাকরি ছেড়ে দেওয়া, অবসর, অন্য হাসপাতালে চলে যাওয়ায় প্রায় ১৫ জন চিকিৎসক কম রয়েছে এই হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

মহকুমার পাঁচ ব্লক তো বটেই, নদিয়া এবং হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অংশের প্রায় ১২ লক্ষ মানুষের ভরসা কালনা হাসপাতাল। অথচ চিকিৎসকের অভাব মিটছেই না। সমস্যা একটু জটিল হলেই রোগীকে অন্যত্র রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। ক্ষোভ বাড়ছে রোগী পরিবারের।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত দু’বছরে সিক নিও নেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ), হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) মতো নতুন বিভাগ চালু হয়েছে। কিন্তু বাড়েনি ডাক্তারের সংখ্যা। উল্টে চাকরি ছেড়ে দেওয়া, অবসর, অন্য হাসপাতালে চলে যাওয়ায় প্রায় ১৫ জন চিকিৎসক কম রয়েছে এই হাসপাতালে। যে মেডিসিন বিভাগে রোগীর সমখ্যা সব থেকে বেশি সেখানে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই নেই। ফলে অন্য এক চিকিৎসক সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন রোগী দেখছেন। বাকি দিন ভরসা মেডিক্যাল অফিসারেরা। জোড়াতালির সংসারে বহু সময় এক বিভাগ থেকে আর এক বিভাগে চিকিৎসকেরা সময়ে পৌঁছতে পারছে না বলেও অভিযোগ।

হাল খারাপ শিশু বিভাগেও। এক জন ডাক্তার আছেন, প্রয়োজন আরও দু’জন। দিন তিনেক আগে নাদনঘাটের এক কিশোর খেলতে খেলতে রুপোর হার গিলে ফেলে। কালনায় ভর্তি করানো হলেও পরিকাঠামো না থাকায় তাকে বর্ধমানে পাঠানো হয়। হাসপাতালের দাবি, এ ধরনের ঘটনায় মেডিক্যাল বোর্ড বসানো হয়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের অভাবে তাও করা যায়নি। এ ছাড়া মেডিসিন বিভাগের জেনারেল ডিউটি, এসএনসিইউ, এইচডিইউ যেখানে ৫ জন চিকিৎসকের দরকার সেখানে রয়েছেন মাত্র ২ জন। চর্ম বিভাগেও কোনও চিকিৎসক নেই। চিকিৎসকের অভাবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বর্হিবিভাগ ছাড়া কিছু চালু করা যায়নি। প্রসূতি, মেডিসিন, নেফ্রলজি, কার্ডিওলজি, ইউরোলজি বিভাগেও কবে চিকিৎসক মিলবে তার উত্তর নেই কর্তৃপক্ষের কাছে।

Advertisement

এক রোগীর আত্মীয় গোপাল দাসের ক্ষোভ, কালনা থেকে ৬০ কিলোমিটারের বেশি দূর বর্ধমান মেডিক্যাল। অথচ পরিস্থিতি সামান্য জটিল হলেই বাধ্য হয়ে গাড়ি ভাড়া করে সেখানেই নিয়ে যেতে হচ্ছে রোগীকে। স্থানীয় মানুষজনের দাবি, হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি মনে করাচ্ছে ২০১৩ সালের কথা। সে বারও চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতাল বাধ্য হতো দলে দলে রোগী ফিরিয়ে দিতে। পরিষেবা তলানিতে নামায় হাসপাতালের নাম হয়ে গিয়েছিল ‘রেফারেল হাসপাতাল’।

কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে? হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘আমরা সাধ্যের মধ্যে ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার বক্তব্য, ‘‘জেলাশাসক, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন