মহিলা হস্টেলে রাত পাহারায় হাজির ছাত্রেরা

বুধবার আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পাহারা দিয়ে হস্টেলে পৌঁছে দেয় পুলিশ। রাতভর পুলিশের টহল ছিল এলাকায়।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৯ ০১:০১
Share:

হস্টেলের বাইরে নিজস্ব চিত্র

অভিযোগ, রাতে হস্টেলের জানালা দিয়ে মুখ বাড়াতেই উড়ে এসেছিল ‘হুমকি’। শুনতে হয়েছিল, ‘এ বার অ্যাসিড ছুড়ব’। ভয়ে দরজা, জানালা বন্ধ করে রাত কাটিয়েছিলেন তাঁরা, দাবি বর্ধমান মেডিক্যালের পড়ুয়া মহিলা চিকিৎসকদের একাংশের। বুধবার রাতে তাঁদের ভরসা দিতে পুলিশের সঙ্গে পাহারায় রইলেন বর্ধমান মেডিক্যালের ছাত্রেরা।

Advertisement

বছর দেড়েক আগেও নিরাপত্তার দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সাক্ষী ছিল এ হাসপাতাল। সে বার ৩৬ জন রক্ষী থেকে সংখ্যাটা বেড়ে হয় ২৯২। তার পরেও নিরাপত্তায় ফাঁক রয়েছে, দাবি বর্ধমান মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রী, চিকিৎসকদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, হস্টেলের ধারেই রাস্তা। পাঁচিল উঁচু না হওয়ায় যখন-তখন বহিরাগতেরা তা টপকে মাঠে ঢোকে। বসে মদ-গাঁজার আসর। হস্টেলের গেটও কার্যত অরক্ষিত। বহিরাগতেরা মাঝেমধ্যেই ‘অভব্য’ আচরণ করে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, দোতলার ‘অপারেশন থিয়েটার’, রাধারানি ওয়ার্ডে নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও অবাধে বাইরের লোক যাতায়াত করে বলেও তাঁদের ক্ষোভ।

এনআরএস-কাণ্ডের পরে এ সব কথা তাঁরা ফের জানান কর্তৃপক্ষকে। তার সঙ্গেই অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার রাতভর বহিরাগতেরা মোটরবাইক নিয়ে হস্টেলের নীচে দাপাদাপি করেছে, অ্যাসিড ছোড়ার হুমকি দিয়েছে।

Advertisement

বুধবার আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পাহারা দিয়ে হস্টেলে পৌঁছে দেয় পুলিশ। রাতভর পুলিশের টহল ছিল এলাকায়। দু’টি মহিলা হস্টেলের বাইরে পুলিশ পাহারায় বসে। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্ব দেওয়া হয় ইনস্পেক্টর পদ মর্যাদার এক আধিকারিককে।

পুলিশের সঙ্গে মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ভার নেন মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রেরাও। রাতভর হস্টেলের সামনে দু’দফায় পাহারা দেন তাঁরা। ১১টা থেকে ৩টে এবং ৩টে থেকে ভোর পর্যন্ত ছ’জন করে পাহারা দেন। জুনিয়র ডাক্তার সৌরভ দে, শুভজিৎ রায়, শীর্ষেন্দু সেনগুপ্তরা বলেন, ‘‘আমরা থাকলে সহপাঠীরা ভরসা পাবেন, এই ভেবে পাহারা দিয়েছি।’’

জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের বক্তব্য, হস্টেলের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে অনেকে সরব হয়েছিলেন ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য়। তার কিছুটা ঠিক, সবটা নয়। তাই বৃহস্পতিবার ‘বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সুরক্ষিত, মহিলা হস্টেল সুরক্ষিত’ বলেও অনেকে নতুন করে ‘পোস্ট’ করেন। তাঁদের আবেদন, ‘‘দয়া করে গুজবে কান দেবেন না।’’ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ, অধ্যক্ষ সুহৃতা পালও বলেন, ‘‘গুজব ছড়ানো হয়েছে। তার জেরে হস্টেলের মেয়েরা আতঙ্কিত হন। তবে নিরাপত্তা যাতে বরাবর থাকে, তা পুলিশকে বলা হয়েছে। পুলিশ আমাদের আশ্বস্ত করেছে।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন