বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।—ফাইল চিত্র।
তিন মাস আগে আট কোটি টাকা এসে গিয়েছে। তারপরেও জমি-জটে কাজ শুরু করতে পারছিল না বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ধমান শাখা। এ মাসে কেটেছে সেই জট। কর্তৃপক্ষের আশা, পুজোর আগেই বর্ধমানে ক্যাম্পাসের ভবন তৈরি-সহ সামগ্রিক উন্নয়নের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ধমান ক্যাম্পাস শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। তাঁর ইচ্ছাতেই জেলা কৃষি খামারে পড়ে থাকা জমির একাংশে ভবন তৈরি করে ৩২ জন পড়ুয়াকে নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়ানো শুরু হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী স্নাতক স্তরে পাঠক্রমের জন্য ৭৫ একর জমির প্রয়োজন। যার মধ্যে ৫০ একর জমিতে পড়ুয়ারা হাতে-কলমে চাষ, বীজ উৎপাদন, পোকামাকড় ও কৃষি প্রযুক্তি সম্বন্ধে শিক্ষা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওই রিপোর্টের আগে ২০১৫ সালের ১০ মে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য চিত্তরঞ্জন কোলে জেলা কৃষি খামারে অব্যবহৃত ২০১ একর জমিই চেয়ে কৃষি দফতরকে চিঠি দিয়েছিলেন। তবে কৃষি দফতরের তরফে সাড়া মেলেনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরির জন্যেও রাজ্য সরকারের কাছে ২৫ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি পাঠায় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট মেনে ৭৫ একর জমি দেওয়ার কথাও জানানো হয়। এর মধ্যে এ বছরের ১ মার্চ রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন তৈরির জন্য প্রথম পর্যায়ে ৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করে। সেই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছে যায় টাকা। তবে জমি না থাকায় চিন্তায় পড়েন কর্তৃপক্ষ।
উপাচার্য ধরণীধর পাত্র ফের চিঠি দেন। টনক নড়ে কৃষি দফতরের। শেষমেশ জেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে জমির মাপজোক করে ৭৩ একর জমি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ধমান ক্যাম্পাসের দায়িত্বে থাকা অ্যাসোসিয়েট ডিন সইফুদ্দিন আহমেদ খান বলেন, “কিছু দিন আগে জমি হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে। টাকাও রয়েছে। পুজোর আগেই কাজ শুরু হয়ে যাবে, আশা করছি।”
ভবনের জন্য ১৭ একর জমি দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানান, ৫০ একর জমিতে হাতে কলমে শিক্ষা ভাল হবে। নিজস্ব জমি ছিল না বলে গত দু’বছর ধরে পড়ুয়াদের সমস্যা হচ্ছিল। তাঁরা এ বার গবেষণা, বীজ উৎপাদন, কৃষি-সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ আরও ভাল ভাবে নিতে পারবেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, “বর্ধমান ক্যাম্পাসের সমৃদ্ধির জন্য মুখ্যমন্ত্রী এক কথায় জমি হস্তান্তর করতে রাজি হয়েছেন। ওই ক্যাম্পাসের গায়েই রয়েছে বীজ সংশোধাগার ও মাটি পরীক্ষা কেন্দ্র। এর ফলে পড়ুয়াদের আরও সুবিধা হবে। ইচ্ছা রয়েছে, কৃষি বিপণন বিষয়টি ওখানে চালু করে পড়ুয়াদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলা।”