শুনানি পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে এজলাস বয়কট করেছিলেন আইনজীবীরা। সিজেএম সঞ্জয়রঞ্জন পাল অবশ্য আদালতের কাজ আটকে রাখেননি। অভিযুক্তদের নিজেরই সওয়াল করতে দিয়ে কাজ চালাচ্ছিলেন তিনি। এ বার বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য জেলা জজের কাছে আর্জি জানাল জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন।
সোমবার দুপুরে বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মেনে জেলার প্রধান বিচারকর কুন্দনকুমার কুমাইয়ের কাছে চিঠি পাঠান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সদন তা। তিনি বলেন, “সিজেএম এজলাস বয়কট এখনই উঠছে না। তবে জেলা জজের কাছে চিঠি দিয়ে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানানো হয়েছে।’’ পাশাপাশি আসানসোল, দুর্গাপুর, কাটোয়া ও কালনার বার অ্যাসোসিয়েশনকেও আন্দোলনে সামিল হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। আইনজীবীদের একাংশের দাবি, এক দিকে আলোচনার রাস্তা খুলে রাখল বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশন। অন্য দিকে, সিজেএমের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য মহকুমা স্তরের বার অ্যাসোসিয়েশনকেও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আবেদন জানাল।
সপ্তাহ খানেক আগে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্ট থেকে সিজেএম (চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) হয়ে বর্ধমান আদালতে আসেন সঞ্জয়রঞ্জন পাল। সে দিন বিকেলেই শুনানি-পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর এজলাস বয়কটের ডাক দেন আইনজীবীরা। পরের দিন, বুধবার অনির্দিষ্ট কালের জন্য এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় বার অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু আদালতের কাজ আটকে রাখেননি বিচারক। অভিযুক্তদের সওয়াল করার সুযোগ দিয়ে এই ক’দিনে বেশ কয়েকজনকে জামিন দেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ৯টি মামলার ২২ জন অভিযুক্ত কাঠগড়া থেকেই জামিন চেয়ে সরাসরি বিচারকের কাছে আবেদন করেন। বেশ কয়েকজন জামিনও পান।
কিন্তু বয়কট ডাকার পরেও জেলা প্রধান বিচারকের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দেওয়া হল কেন? বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, সিজেএম এজলাসের অচলাবস্থা কাটাতে জেলার প্রধান বিচারকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। তাই বার অ্যাসোসিয়েশন অনুরোধ করেছে। আইনজীবীদের একাংশ জানিয়েছেন, এর আগেও বার অ্যাসোসিয়েশন বেশ কয়েকবার সিজেএম এজলাস বয়কট করেছে। সেই সময় ওই এজলাসের সমস্ত কাজ বন্ধ রেখে দিতেন বিচারকেরা। কিন্তু এ বার বিচারক অভিযুক্তদের সওয়াল শুনে জামিন দিচ্ছেন। ফলে, বার অ্যাসোসিয়শনের উদ্দেশ্য সফল হচ্ছে না। তাই আলোচনার ভিত্তিতে সিজেএম এজলাসে ঢুকতে চাইছেন তাঁরা। সদনবাবুর দাবি, “আমাদের দাবির পরে জেলা প্রধান বিচারক চিঠি দিয়ে সিজেএম এজলাসে যাওয়ার জন্য বলেছেন। কিন্তু আমরা দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা চাইছি, যাতে আইনজীবীরা ভবিষ্যতে আর অপমানিত না হন।’’ সিজেএমের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি।