সন্ত্রাস চলছে, মনোনয়ন দিতে গিয়ে অভিযোগ বাম প্রার্থীর

মনোনয়ন দেওয়ার আগে থেকেই দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়া, দলের কর্মী-সমর্থকদের ভয় দেখানো চলছে বলে অভিযোগ করলেন মন্তেশ্বরের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ ওসমান গনি সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৯
Share:

বাঁ দিকে, ওসমান গনি সরকার। ডান দিকে, শেখ বুলবুল আহমেদ। নিজস্ব চিত্র।

মনোনয়ন দেওয়ার আগে থেকেই দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়া, দলের কর্মী-সমর্থকদের ভয় দেখানো চলছে বলে অভিযোগ করলেন মন্তেশ্বরের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ ওসমান গনি সরকার। সোমবার উপনির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে তিনি দাবি করেন, ‘‘শাসক দলের ভয় দেখানো সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন যদি ঠিকঠাক ভোট করাতে পারে তাহলে জয় নিশ্চিত।’’

Advertisement

গত তিনটি বিধানসভা ভোটেই মন্তেশ্বরে বামেদের প্রার্থী ছিলেন চৌধুরী মহম্মদ হেদায়তুল্লাহ। দু’বার বড় ব্যবধানে জিতলেও এ বারের ভোটে তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজার কাছে হেরে যান তিনি। কিন্তু সজলবাবুর অকালমৃত্যুতে উপনির্বাচন ঘোষণা হয়। সিপিএম সূত্রের খবর, হেদায়তুল্লা শারীরিক কারণে ভোটে দাঁড়াতে রাজি না হওয়ায় প্রার্থী করা হয় কুলুট দাসপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি সরকারকে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ এই শিক্ষক ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। দু’বার করে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৩ সালে মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। বর্তমানে মেমারি ২ জোনাল কমিটির সদস্য। এ দিন মনোনয়ন জমা দিতে প্রার্থীর সঙ্গে আসেন দলের বর্ধমান জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তাপস চট্টোপাধ্যায়, মেমারি ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক অশেষ কোনার, প্রাক্তন বিধায়ক হেদায়তুল্লাহ-সহ বেশ কিছু সিপিএম নেতা। মিছিল করে কালনা মহকুমাশাসকের দফতরে পৌঁছনোর পরে রিটার্নিং অফিসার অসীমকুমার নিয়োগীর হাতে মনোনয়ন জমা দেন তাঁরা।

সিপিএম প্রার্থীর অভিযোগ, বিধানসভার ১৭টি পঞ্চায়েত এলাকায় বহিরাগত ১১ জন বিধায়ককে নামিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তারপরেও বাড়ি বাড়ি হুমকি, দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়া চলছে। তাঁর দাবি, ‘‘ওদের মানুষের উপরে ভরসা নেই। তাই সন্ত্রাস করছে।’’

Advertisement

এ বারের বিধানসভা ভোটের পরেও মন্তেশ্বরের জামনা, বাঘাসন, দেনুড় পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল বামেরা। পরে অনাস্থা এনে তৃণমূল তার দখল নেয়। উপনির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় সঙ্গেসঙ্গেই প্রচারও শুর হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের। দলের সমর্থক শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, প্রাণিবন্ধুদেরও প্রচারে নামানো হয়েছে। যদিও ঠিকঠাক ভোট হলে এ সবের কোনওটাতেই কাজ হবে না বলে দাবি সিপিএম নেতাদের। জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তাপসবাবু বলেন, ‘‘এখানকার মানুষ আমাদের চান। আগেও বারবার প্রমাণিত হয়েছে। এ বারও ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়ে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করা হবে।’’ যদিও সিপিএমের কোনও অভিযোগই মানতে চাননি তৃণমূল নেতারা।

সিপিএম প্রার্থীর সঙ্গে এ দিন মনোনয়ন পত্র দাখিল করে কংগ্রেস প্রার্থী শেখ বুলবুল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘দলের ভাল ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে এই বিধানসভা কেন্দ্রে। তাই ভাল ফলের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।’’ তাঁর দাবী, মন্তেশ্বরে শাসক দলের অন্তর্কলহ রয়েছে। ফলে তৃণমূলের বহু ভোটই এদিকে আসবে।

যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপনবাবু বলেন, ‘‘সিপিএম, কংগ্রেস অলীক স্বপ্ন দেখছে। দল ওখানে বড় ব্যবধানে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ওই তৈরি হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement