কর্মিসভায় দেখা নেই নেতাদের

সোমবার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জামুড়িয়ার বোগড়ায় ওই কর্মিসভাটি হয়।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩৩
Share:

জামুড়িয়ার বোগড়ায় বিজেপির কর্মিসভা। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কর্মিসভা। অথচ, সেখানে অনুপস্থিত এলাকায় দলের নেতাদের অনেকেই। সোমবার জামুড়িয়ায় এমনটাই দাবি করলেন পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। জেলা সভাপতির এমন মন্তব্যের পরে জামুড়িয়ায় দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন উঠল বলে মনে করছেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ।

Advertisement

সোমবার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জামুড়িয়ার বোগড়ায় ওই কর্মিসভাটি হয়। সেখানে বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারেও বিজেপির প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের উপস্থিতিতেই লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মিসভায় এলাকায় দলের অনেক পদাধিকারীই অনুপস্থিত। এ দিন যাঁরা অনুপস্থিত তাঁদের দল থেকে বার করে দিতে হবে। কারণ এ ভাবে চললে এ বারেও জামুড়িয়া জেতা যাবে না। নতুন ছেলেদের দায়িত্বে নিয়ে আসতে হবে।”

ঘটনাচক্রে গত বার, ভোটের ফলে এই লোকসভা কেন্দ্রে পদ্মফুল ফুটলেও বিজেপি জামুড়িয়া ও পাণ্ডবেশ্বর লোকসভা কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে ছিল। ফলে, স্বাভাবিক ভাবেই এ বারের ভোটে জামুড়িয়ার গুরুত্ব বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, মনে করছেন বিজেপি কর্মীরা। যদিও, বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায়, মদন ত্রিবেদীরা সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও পাণ্ডবেশ্বর, এই তিন বিধানসভা এলাকায় তাঁদের সাংগঠনিক উপস্থিতি আগের তুলনায় অনেক জোরদার হয়েছে। এমনকি, ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে এই তিন এলাকায় পাঁচটি দলীয় কার্যালয় থাকলেও এ বার আরও নতুন করে ১৬টি দলীয় কার্যালয় হয়েছে বলেও দাবি করেন ওই নেতারা। আরও দাবি, দলের সদস্য সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে এই এলাকায়।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু, জেলা সভাপতির এই মন্তব্য আসলে এলাকার সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন তুলল বলে মনে করছেন বিজেপির স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ। কিন্তু এ দিন কারা অনুপস্থিত ছিলেন? বিজেপি সূত্রেই জানা যায়, জামুড়িয়া বিধানসভা এলাকায় ২৪৬টি বুথ রয়েছে। তার মধ্যে বিজেপির ‘শক্তিকেন্দ্র’ রয়েছে ৪৮টি। ন্যূনতম পাঁচটি বুথ নিয়ে এক একটি ‘শক্তিকেন্দ্র’। প্রতিটি শক্তিকেন্দ্রে রয়েছেন এক জন করে প্রধান (বিজেপির সাংগঠনিক পরিভাষায় ‘প্রমুখ’)। এ ছাড়া রয়েছে বুথ কমিটি, ব্লকের সম্পাদক মণ্ডলী। সাংগঠনিক ভাবে জামুড়িয়া বিধানসভা এলাকাকে চারটি ভাগে (‘মণ্ডল’/ ব্লক) ভাগ করেছে বিজেপি।

বিজেপি সূত্রে জানা যায়, এ দিন ওই কর্মিসভায় এই সব কটি স্তর থেকেই বেশ কয়েক জন পদাধিকারী আসেননি।

কিন্তু কেন আসেননি ওই নেতারা? এ দিন অনুপস্থিত বিজেপির ভুড়ি বুথ কমিটির সভাপতি রাজীব বাউরির দাবি, ‘‘পারিবারিক কাজ ছিল।’’ কেন্দা শক্তিকেন্দ্রের প্রধান শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কর্মস্থলে ছুটি পাইনি।’’ রঘুপতি মণ্ডল নামে বিজেপির এক সম্পাদক বলেন, ‘‘আমি অসুস্থ, দল তা জানে।’’

তবে এই নেতারা যা-ই ব্যাখ্যা দিন না কেন, গোষ্ঠী কোন্দলই এই অনুপস্থিতির অন্যতম কারণ বলে দাবি এলাকার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন লোকজনের। যদিও এ বিষয়ে লক্ষ্মণবাবুর দাবি, ‘‘দলে কোনও কোন্দল নেই। কর্মিসভার আলোচনা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন