সর্বমঙ্গলা মন্দির থেকে রাজবাটি, ছুটলেন সুরেন্দ্র

তৃণমূলের অনেক নেতাও মেনে নিয়েছেন, প্রার্থী হেভিওয়েট হওয়ায় ‘চাপ’ বেড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০৭
Share:

বিজেপি প্রার্থীর মিছিল তখন কার্জন গেট চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

দেরি করে মাঠে নামলেন। কিন্তু প্রথম দিনেই ‘খেলা জমিয়ে’ দিলেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তৃণমূলের অনেক নেতাও মেনে নিয়েছেন, প্রার্থী হেভিওয়েট হওয়ায় ‘চাপ’ বেড়েছে।

Advertisement

সোমবার টাউন হলের সামনে হুড খোলা জিপে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার ভারপ্রাপ্ত নেতা সন্দীপ নন্দী ও দলের পশ্চিম বর্ধমানের সভাপতি লক্ষ্মণ ঘড়ুইকে পাশে নিয়ে বিজেপি প্রার্থী বলেন, “শত্রু আর প্রতিদ্বন্দ্বীদের শেষ করার জন্যে মোদীজি আর অমিতজি আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। এর আগে ওঁরা দার্জিলিং পাঠিয়েছিলেন। ওখানে দাঁড়িয়েছিল সেরা ফুটবলার, ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন ভাইচুং ভুটিয়া। আমাকে নানা রকম কটাক্ষ করা হয়েছিল। ফল কী হয়েছিল সবাই জানেন। লোকসভা নির্বাচন দেশকে সুরক্ষিত ও সমৃদ্ধ করার জন্যে নির্বাচন।’’

এ দিন পৌনে ১২টা নাগাদ সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেন অহলুওয়ালিয়া। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী মণিকাদেবী ও অন্য পরিজনরা। সেখান থেকে তিনি চলে যান জিটি রোডর গুরুদ্বারে। বেলা ১টা নাগাদ এসে পৌঁছন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ‘রাজবাটী’তে। ততক্ষণে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজেপি কর্মীরা চলে এসেছেন। শুধু পূর্ব বর্ধমান নয়, বিজেপি প্রার্থীর লোকসভা কেন্দ্রর মধ্যে থাকা দুর্গাপুর থেকেও বাসে করে কর্মীরা এসেছিলেন। প্রার্থীর মিছিলে ছিল রণপা, ব্যান্ড, তাসা, পুরুষ ও মহিলা ঢাকির দল। রাজবাটী থেকে বেশ কিছুটা রাস্তা হাঁটার পরে হুড খোলা গাড়িতে চড়েন প্রার্থী। ততক্ষণে মিঠাপুকুর-বড়বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমে মোবাইলে ছবি তুলতে শুরু করে দেন। অহলুয়ালিয়া বলে ওঠেন, “বর্ধমানের কত কিছু মনে পড়ছে। বর্তমান প্রজন্ম ছাত্র নেতা হিসেবে আমাকে চিনবে না। কিন্তু তাদের বাবা-মায়েরা জানে, আমি কী রকম ছিলাম।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মিছিল পৌঁছয় বিসি রোডে। রাস্তার ধারে বিভিন্ন বাড়ির বারান্দা, ছাদে দেখা যায় ভিড়, ছবি তোলার হিড়িক। অনেকে মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে বা রিকশা থেকে মোবাইলে ছবি তোলেন। কার্জন গেটের কাছে এসে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে আদরও করেন প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্য নির্বাচন কমিশন করে। লোকসভা নির্বাচন করে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।’’ পুলিশ কর্তাদের বদলে নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘যেখানেই গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ হবে, সেখানেই নির্বাচন কমিশনারের হাত পৌঁছবে।’’

এ দিনের মিছিলের পরে তৃণমূলের একাংশের দাবি করেন, জবরদস্ত প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়া যাবে না। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে ভোট চাইতে হবে। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রায় ১২ শতাংশ অবাঙালি ভোট এককাট্টা হয়ে যাবে বলেও অনুমান তাঁদের। বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বও ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীর জন্যে প্রকাশ্যে আসবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।

বিজেপি নেতা আইনুল হকের দাবি, “জনগণের মধ্যে এ রকম উচ্ছ্বাস অনেক দিন দেখা যায়নি। ভোট দেওয়ার জন্যে সবাই মুখিয়ে রয়েছে।’’ দুর্গাপুরের বিজেপি নেতা লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়েরও দাবি, “ভোট দিতে না পারার যন্ত্রণায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ।’’

প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতারা অবশ্য বিজেপিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছেন। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট অরূপ দাস বলেন, “জনমানসের মধ্যে বিজেপির কোনও প্রভাব নেই। বর্ধমান-দুর্গাপুরের মানুষ দিদিকে ভরসা করেন। তাঁরা চান, দিদির হাত ধরে যে ভাবে বাংলার উন্নয়ন হয়েছে, গোটা দেশেও তার প্রভাব পড়ুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন