পুরনো মুখেই ভরসা রাখল তৃণমূল
আট বছর আগে তিনি বিধায়ক হয়েছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে লড়াই করে। তার বছর তিনেক পরেই যোগ দেন তৃণমূলে। সে বারই লোকসভা ভোটে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করেন দলীয় নেতৃত্ব। বড় ব্যবধানে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন তিনি। লোকসভা ভোটে আরও এক বার তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত এই কেন্দ্রে তাঁর উপরেই ভরসা রাখলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাঁকসার একটি স্কুলে বাংলার শিক্ষক ছিলেন সুনীলবাবু। মঙ্গলবার বিকেলে দলনেত্রী তাঁর নাম ঘোষণা করার পরেই কালনার সিঙ্গেরকোন থেকে প্রচার শুরু করেন তিনি। সেখান থেকে তিনি বলেন, “সাংসদ হিসেবে আমার কাজ, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ দেখেই দল আমার নাম বিবেচনা করেছে। দলের পর্যবেক্ষক ও জেলা সভাপতি-সহ সব স্তরের নেতারা নিশ্চয় আমাকে ফের প্রার্থী হিসেবে চেয়েছেন।” এ দিন বিকেল থেকেই এই কেন্দ্রের অন্তর্গত কাটোয়া, পূর্বস্থলী উত্তর ও দক্ষিণ, কালনা, মেমারি, রায়না ও জামালপুর বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় তাঁর নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে।
জেলার এক তৃণমূল নেতা অবশ্য এ দিন দাবি করেন, “এই কেন্দ্রে প্রার্থী বদলের দাবি যে একেবারে ওঠেনি, তা নয়। নানা কারণেই দলের একটি অংশের কর্মীরা এই দাবি তুলেছিলেন। জামালপুরে দলের একটি সভার পরে সুনীলবাবুকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় কর্মীরা।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের জেলা ও শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য প্রার্থী বদলের ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন না। তাঁর অন্যতম কারণ, কখনও কোনও বিতর্কে সুনীলবাবুর নাম না জড়ানো। এ ছাড়া সাংসদ তহবিলের বেশিরভাগ টাকাই তিনি খরচ করেছেন পাঁচ বছরে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সুনীলবাবু দাবি করেন, “দীর্ঘদিনের দাবি মেনে কাটোয়ার মালঞ্চ গ্রামে যাতায়াতের জন্য নদীতে সেতু তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। রায়নার সুবলদহ গ্রামে স্বাধীনতা সংগ্রামী রাসবিহারী বসুর বাড়ি সংস্কারেও সাংসদ তহবিল থেকে বরাদ্দ হয়েছে। সেই সঙ্গে সাতটি বিধানসভা এলাকায় ৯৩টি উচ্চ বাতিস্তম্ভ লাগানো হয়েছে। এই সব উন্নয়নমূলক কাজের জন্যই দলনেত্রী আমাকে ফের প্রার্থী করেছেন।’’ দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী বেছেছেন। লোকসভা কেন্দ্রের পরিচিত মুখ সুনীলবাবু। তাঁকে জেতানোর জন্য দলের সবাই মাঠে নেমেছে।’’ বর্ধমান পূর্ব লোকসভার দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা কৃষ্ণ ঘোষ অবশ্য দাবি করেন, “প্রার্থী নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এর ফল তো আমরা পাবই।’’