প্রতীকী চিত্র।
কিছু দিন আগেই গত লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র এবং কেন্দ্রের অন্তর্গত এই এলাকায় হার থেকে ‘শিক্ষা’ নেওয়ার কথা বলেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন (দাশু)। এ বার জামুড়িয়ার কর্মিসভা থেকে দ্বন্দ্ব ভুলে এক জোট হয়ে কাজ করার বার্তা দিলেন তিনি। পাশাপাশি, দলীয় নেতা, কর্মীদের ‘গুরুত্ব হারানোর’ কথা বললেন ভি শিবদাসন।
মঙ্গলবার দলীয় প্রার্থী মুনমুন সেনের নির্বাচনী এজেন্ট দীপ্তাংশু চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে জামুড়িয়ার নজরুল শতবার্ষিকী ভবনে তৃণমূলের কর্মিসভা হয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, এলাকার তিন জন দলীয় কাউন্সিলর সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীরা জানান, এর পরেই ভি শিবদাসনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছেড়ে সবাইকে একজোট হয়ে চলতে হবে। দলের ক্ষতি হলে নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব হারাতে হবে।” তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিনের কর্মিসভায় দেখা যায়নি ৫, ৭, ৮ নম্বরের কাউন্সিলর যথাক্রমে রামচন্দ্র নুনিয়া, রাখি কর্মকার এবং বাঁটুল রজককে। কেন তাঁরা আসেননি? রামচন্দ্রবাবুর বক্তব্য, ‘‘পারিবারিক কাজ ছিল।’’ বাঁটুলবাবু বলেন, ‘‘একটি বিক্ষোভের খবর পেয়ে বীজপুরে গিয়েছিলাম। ব্লক সভাপতিকে তা জানাই।’’ রাখিদেবী বলেন, ‘‘দশ দিন আগে স্কুটি থেকে পড়ে চোট পাই। এ দিন চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কিন্তু জেলা সভাপতির মঙ্গলবারের মন্তব্য আসলে ফের এলাকার কোন্দলের দিকেই আঙুল তুলেছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশ। দিন পনেরো আগেই জামুড়িয়ারই নিঘা এবি পীট এলাকায় তৃণমূলের একটি কর্মিসভায় বেশ কয়েক জন নেতাকে দেখা যায়নি। তা দেখে ভি শিবদাসন মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘এই কর্মিসভাটি ব্যর্থ।’’
অতীতের নানা নির্বাচনের নিরিখে জামুড়িয়া বরাবরই বিরোধীদের শক্ত ঘাঁটি। জামুড়িয়া ১ ব্লকে আসানসোল পুরসভার ১৩টি ওয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূল ও সিপিএমের দখলে যথাক্রমে ১১টি ও দু’টি ওয়ার্ড। ১৯৭৭ থেকে ২০১৬, টানা এই এলাকায় সিপিএমের বিধায়ক। ২০১৪-র লোকসভা ভোটেও জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রে সামান্য ভোটে এগিয়ে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী। যদিও পঞ্চায়েত ভোটে জামুড়িয়া ছিল তৃণমূলময়। কিন্তু অতীতের নানা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে জামুড়িয়াতে এ বারেও তৃণমূলের জন্য শক্ত লড়াই বলেই মনে করছেন এলাকার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লোকজন। সেখানে তাই ‘একজোট’ হওয়াটাই প্রধানত দরকার, জানাচ্ছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ। যদিও কোনও রকম কোন্দলের কথা মানতে চাননি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি (জামুড়িয়া ১) সাধন রায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা সবাই এক হয়ে ভোটে পরিশ্রম করছি।’’
এ দিনই সিঁদুলি কোলিয়ারি দুর্গা মন্দিরে আয়োজিত কর্মিসভায় রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘দলীয় প্রার্থীকে বিরাট ব্যবধানে জেতানোই আমাদের লক্ষ্য।”